অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার (activity tracker) কি সত্যিই আপনাকে  ফিট থাকতে সাহায্য করতে পারে?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারগুলি (activity tracker) পরিধানযোগ্য ডিভাইস হিসাবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে যা আমাদের শারীরিক কার্যকলাপের বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ করে শরীরের বর্তমান ফিটনেস সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারনা দেয়। এই ডিভাইসগুলি, উন্নত সেন্সর এবং অ্যালগরিদম দিয়ে সজ্জিত যা একজন ব্যক্তিকে তাদের ফিটনেস অর্জনে সাহায্য করে।

তবে আপনি যদি ২০২৪ সালে নতুন বছরের শুরু থেকে নিজেকে আরও ফিট রাখার জন্য একটি অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারে বিনিয়োগ করার কথা ভাবেন সেক্ষেত্রে কয়েটি বিষয় আপনার বিবেচনা করা দরকার সত্যি কি অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার আপনার ফিটনেসকে কাঙ্ক্ষিত স্তরে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারবে? এই ট্রাকারের সুবিধা কি?একটি অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার কেন আপনার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন?

অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারগুলির (activity tracker) একটি প্রাথমিক সুবিধা হল এটি আমাদের দৈনন্দিন শারীরিক ক্রিয়াকলাপ নিরীক্ষণ এবং ট্র্যাক করার ক্ষমতা। এই ডিভাইসগুলি সঠিকভাবে আমাদের করা বিভিন্ন কাজের হিসেব দেয়।এটি আমরা কতটা দূরত্ব চলেছি তার যেমন হিসেব দেয় সেই সাথে আমাদের সারা দিনে কতটা ক্যালোরি পুড়েছে, হার্টের হার এবং এমনকি ঘুমের ধরণগুলিও সঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারে। রিয়েল-টাইম ডেটা প্রদান করে, অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে এবং সেগুলি অর্জনের দিকে তাদের অগ্রগতি বুঝতে সাহায্য করে। অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারের মাধ্যমে প্রতিদিনের প্রাপ্ত এই ডেটা একজন ব্যক্তির কাছে অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক হতে পারে, কারণ এটি একজন ব্যক্তিকে  তার প্রচেষ্টাকে বুঝতে এবং সেই মত তার রুটিনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে সাহায্য করে।

বেশিরভাগ লোকেরই সারা দিনে তারা কতটা ক্যালোরি ব্যবহার করেছে সেই সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট ধারনা থাকে না ,ফলে এক দিনে তারা কতটা ক্যালোরি ব্যায় করেছে তা নির্ণয় করতে ভুল হয়ে যায়। একবার যখন লোকেরা সচেতনভাবে তারা কতটা কাজ করেছে তা ট্র্যাক রাখা শুরু করে, তখন তারা বুঝতে পারে যে তারা যা ভেবেছিল তার চেয়ে কম ক্যালোরি খরচ করেছে যা তাদের আরও সক্রিয় হতে অনুপ্রাণিত করে।আপনি অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার ছাড়াই স্ব-নিরীক্ষণ করতে পারেন কিন্তু এই পদ্ধতিটি দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে যাওয়া কঠিন।

যদিও অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারের অনেক সুবিধা রয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে এর সীমাবদ্ধতা স্বীকার করা অপরিহার্য। এই ডিভাইসগুলি সঠিক ডেটা ইনপুটের উপর নির্ভর করে আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ ,কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এই  অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারগুলি সঠিক পরিমাপ দেয় না। গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারগুলি সাধারণত নির্ভরযোগ্য হয়। এটি সঠিকভাবে  আমাদের কার্যকলাপ ট্র্যাক করতে পারে।কিন্তু অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারকে কখনও পেশাদার চিকিৎসা পরামর্শের বিকল্প হিসেবে দেখা উচিত নয়।

অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার (activity tracker) ব্যক্তিকে তাদের ফিটনেস অর্জনে সাহায্য করার জন্য মূল্যবান হাতিয়ার হতে পারে। এটি একদিকে যেমন শারীরিক ক্রিয়াকলাপকে উৎসাহিত করে অন্যদিকে এটি স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে কার্যকলাপ ট্র্যাকারগুলি সুস্থ্য জীবন বাজায় রাখতে সহায়ক,কিন্তু সুস্থতার গ্যারান্টি নয়। আপনার ফিটনেস রুটিন বা জীবনযাত্রায় কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করার আগে স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিশেষে, ফিটনেস অর্জনের জন্য শৃঙ্খলা এবং একটি সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজন যা কেবলমাত্র শারীরিক কার্যকলাপ ট্র্যাক করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top