উত্তরাপথ


ভারত কি বিশ্বগুরু হওয়ার পথে ? মাত্র ৬ বছর ৬ মাস ১১ দিনের মাথায় চালু করা নোট বাতিল ঘোষণা করা হল। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোন নোট এত কম সময় বাজারে থাকল। রিজার্ভ ব্যাংকের দেওয়া পরিসংখ্যান আনুসারে ২০১৬ সালে নতুন নোট ছাপাতে আর সেগুলো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বন্টন করতেই সরকারের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচ হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সাধারণ মানুষ ব্যাংকে গিয়ে যে পুরনো নোট জমা দিয়েছিল, তাতে সাধারণ ব্যাঙ্কগুলির আমানত রাতারাতি বৃদ্ধি পায়। তার ফলে রিজার্ভ ব্যাংককে অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা সুদ দিতে হয়েছিল।কিন্তু এই অতিরিক্ত অর্থ রিজার্ভ ব্যাংকের খরচ হত না যদি নোট বাতিল না হত। এত খরচ করে কালো টাকা উদ্ধারের নাম করে রিজার্ভ বাঙ্ক যে আয় করেছিল সেটা তার খরচের ১০ শতাংশও নয়। তাহলে আবার এত কম সময়ের ব্যবধানে নোট বাতিলের উদ্দেশ্য কি? এক কথায় যুক্তিযুক্ত কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই দেশের সাধারণ মানুষের কাছে। রিজার্ভ বাঙ্ক জানিয়েছে নোট বাতিল ভারতীয় অর্থব্যবস্থায় কালোটাকা উদ্ধারে সাহায্য করেছিল। রিজার্ভ বাঙ্কের তথ্য অনুসারে ৩১ মার্চ ২০১৮ ব্যাঙ্কনোটের মোট মূল্য সর্বোচ্চ ৬.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা থেকে কমে ৩.৬২ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে এসেছিল যা ২০০০ টাকার নোট চালু করার উদ্দেশ্য পূরণ করেছিল।
কিন্তু রিজার্ভ ব্যাংকের দেওয়া এই তথ্য কতটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে দেশবাসীর কাছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ২০১৬ সালের হঠাৎ করে হওয়া নোটবন্দী জনগনের মধ্যে বড় মূল্যের নোট সঞ্চয়ের প্রতি এক ভীতির সঞ্চার করেছে। এখন মানুষ অতিরিক্ত অর্থ নগদে না রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে। এই ভাবে নোট বাতিলের মাধ্যমে বাজারের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রন কতটা প্রতিষ্ঠিত হবে বা সরকার কতটা কালো টাকা উদ্ধার করতে পারবে তা সময় বলবে। এর আগেও ভারতে তিন বার নোট বাতিল হয়েছিল। প্রথমবার নোট বাতিল হয়েছিল ১৯৪৬ এরপর ১৯৭৮এবং ২০১৬সালে। তবে ২০১৬ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকার এবার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেছে নোট বদলের ক্ষেত্রে। এবছর ২৩ মে থেকে সমস্ত ব্যাঙ্কে ২০০০ টাকার নোট বদলানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবার ২০০০ টাকার নোট বদলানোর জন্য সাধারণ মানুষকে প্রায় চার মাসেরও বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে কোনও ব্যাঙ্কে গিয়ে সাধারণ মানুষ এই নোট পরিবর্তন করতে পারবেন। আরবিআই -এর নির্দেশ অনুযায়ী যে কোনও ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে কোনও ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে নোট পরিবর্তন করতে পারেন। কিন্ত এক্ষেত্রে লিমিট রয়েছে। একবারে মাত্র ১০টি নোট অর্থাৎ ২০,০০০ টাকা পরিবর্তন করা যাবে। ২০০০ টাকার নোট বদলানোর জন্য ব্যাঙ্ক কোনও চার্জ নিতে পারবে না। অর্থাৎ গ্রাহককে কোনও টাকা দিতে হবে না। এই পরিষেবা সম্পূর্ণ ফ্রি। এর জন্য যদি কোনও ধরনের চার্জ নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে আপনি অভিযোগ জানাতে পারেন। এমনকি যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও নেই, তাঁরাও ২০০০ টাকার নোট পরিবর্তন করতে পারবেন।
অন্যদিকে কোনও ব্যক্তি চাইলে ব্যাঙ্কে গিয়ে নোট বদল নাও করতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলে এটিএম কর্নারে যেখানে টাকা ডিপোজিটের মেশিন রয়েছে সেই এটিএমগুলোতে গিয়ে কোনও ব্যক্তি ২০০০ টাকার নোট ডিপোজিট করতে পারবেন। এরজন্য কোনও সীমা নেই। একদিনে যে পরিমাণ টাকা আগে ব্যাঙ্কে রাখা যেত, সেই পরিমাণ অর্থই ATM -এ গিয়ে জমা করতে পারবেন। তবে ব্যাঙ্কিং নিয়ম অনুযায়ী ৫০ হাজারের বেশি জমার ক্ষেত্রে প্যান ও আধার কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন