Durand Cup 2023: ফাইনালে শতাব্দী প্রাচীন দল ইস্ট বেঙ্গল

সংগৃহীত-ছবি টুইটার

 উত্তরাপথঃ শতাব্দীপ্রাচীন অভিজ্ঞতা এবং ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত নাছোড় মনোভাবই ইস্ট বেঙ্গলকে পৌঁছে দিল ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে। রবিবার তাদের প্রতিপক্ষ কে তা ঠিক হবে বৃহস্পতিবার। সেদিন অপর সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি মোহন বাগান ও এফসি গোয়া।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের ঝড় থামিয়ে জ্বলে উঠল মশাল। প্রমাণিত হল, ইস্ট বেঙ্গল সবসময় অপ্রতিরোধ্য ।

 গত কয়েক বছর যথেষ্ট বিবর্ণ কেটেছে ইস্ট বেঙ্গলের। কিন্তু এবার Durand Cup এ তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিয়েছে। ফাইনালে ওঠার পথে লাল-হলুদ জার্সির ঔজ্জ্বল্যে ম্লান মোহন বাগান, পাঞ্জাব এফসি, গোকুলাম ও নর্থইস্ট। এদিন পেনাল্টি শ্যুট-আউটে নন্দর শট জাল কাঁপাতেই গ্যালারির রং লাল-হলুদ। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯ বছর পর ডুরান্ড কাপ জয়ের হাতছানি ইস্ট বেঙ্গলের সামনে।

বিকেল থেকেই প্রায় পতাকা ও ব্যানারে যুবভারতী প্রায় মুড়িয়ে দিয়েছিলেন হাজার হাজার ইস্ট বেঙ্গল সমর্থক। তবে শুরুটা ভালো হয়নি। গোকুলাম ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশনে বদল এনেছিলেন কোচ কুয়াদ্রাত। একটি করে হলুদ কার্ড দেখা বোরহা ও শৌভিককে ডাগ-আউটে রেখেই প্রথম একাদশ সাজিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ। সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। প্রথমার্ধে ছন্নছাড়া ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে দাপিয়ে বেড়াল নর্থইস্ট। অনভ্যস্ত পজিশনে খাবি খেলেন নিশু কুমার। পাশাপাশি উইং প্লে’ও ব্যর্থ।  পারদো আর ক্রেসপো চেষ্টা বিপক্ষ রক্ষণ ভাঙার জন্য যথেষ্ট ছিল না। বরং ২২ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত লিড পেল নর্থইস্ট। ফাল্গুনী সিংয়ের নীচু ক্রসে শরীর ছুড়ে দুরন্ত হেডে লক্ষ্যভেদ মিগুয়েলের (১-০)।  ঘাড়ের কাছে মার্কার লালচুংনুঙ্গা কার্যত দর্শকের ভূমিকায়।

বিরতির পর জোড়া বদল আনলেন কোচ কুয়াদ্রাত। শৌভিক আর বোরহা খেলাটা ধরার মুখেই আবার আঘাত নর্থইস্টের। তুবড়ির মতো জ্বলে উঠলেন সেই ফাল্গুনী সিং। ডানদিক থেকে কাট করে বক্সে ঢুকে নিষ্প্রভ মন্দারকে টপকে দুরন্ত ফিনিশ তাঁর (২-০)।  গোয়ানিজ লেফট ব্যাক পুরো ফিট নন। চনমনে পাহাড়িদের আটকাতে তাঁর জিভ বেরিয়ে গেল। দু’গোলে পিছিয়ে থাকা স্প্যানিশ বস এবার শেষ চাল দিলেন। জর্ডন এলসের পরিবর্তে ক্লেটন সিলভাকে নামিয়ে অল আউট আক্রমণের পথে হাঁটেন তিনি। ৭৭ মিনিটে ব্রাজিলিয়ানের পাস ধরেই ব্যবধান কমাল ইস্ট বেঙ্গল। বক্সের গোড়ায় বল পেয়ে প্লেস করেছিলেন মহেশ। বিপক্ষ ফুটবলার দীনেশের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায় (২-১)। শেষলগ্নে ওই গোলটাই টনিকের কাজ করল।  উইং ধরে নন্দরা দৌড় শুরু করতেই প্রবল চাপে পড়ল বিপক্ষের রক্ষণ।

মাঠে হাজির সমর্থকদের চিৎকার ক্রমশ চাপ বাড়াল বিপক্ষ রক্ষণে। সংযোজিত সময়ের প্রায় শেষ মুহূর্তে সমতা ফেরালেন নন্দ (২-২)। ক্লেটনের ছোট্ট ক্রস থেকে লক্ষ্যভেদ ডার্বির নায়কের। তার আগে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন নর্থইস্টের মিগুয়েল। ডুরান্ড কাপের নিয়ম অনুযায়ী, ৯০ মিনিটের পরই টাই-ব্রেকার। নেই অতিরিক্ত সময়। এই পর্বে ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে জাল কাঁপাতে ভুল হয়নি যথাক্রমে ক্লেটন, ক্রেসপো, বোরহা, মহেশ ও নন্দর। উল্টোদিকে, পার্থিবের শট লাল-হলুদ গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল প্রথমে আটকালেও নিয়মভঙ্গের জন্য রেফারি আবার শট নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় শট ক্রসবারে ধাক্কা খায়। তবে নর্থইস্টের হয়ে এই পর্বে লক্ষ্যভেদে সফল যথাক্রমে ইবসন মেলো, গানি ও প্রজ্ঞানের।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top