উত্তরাপথঃ ২০১৮ সালে ভারতে নির্বাচনী বন্ডকে ( Electoral Bond )রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা আনার একটি উপায় হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।সেইসময় বলা হয়েছিল বন্ড ক্রয় করার সময় দাতাকে তাদের পরিচয় ব্যাঙ্কের কাছে প্রকাশ করতে হবে, কিন্তু বন্ডে নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে না।কে দিয়েছে তা না জেনেও রাজনৈতিক দলগুলো টাকা গ্রহণ করতে পারে।এরফলে কেউ জানতে পারে না কারা রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থের যোগান দিচ্ছে।তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ভারতের নির্বাচনী বন্ডের ( Electoral Bond )গুরুতর দুর্বলতা প্রকাশ করেছে এবং রাজনীতিতে বেআইনি অর্থের প্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
নির্বাচনী বন্ড মূলত ব্যক্তি এবং কর্পোরেটদের তাদের পরিচয় প্রকাশ না করে রাজনৈতিক দলকে অর্থ দান করার একটি উপায় হিসাবে নিয়ে আসা হয়েছিল। এই গোপনীয়তা দাতাদের হয়রানি এবং রাজনৈতিক প্রতিশোধ থেকে রক্ষা করার জন্য ছিল, কিন্তু এই বন্ডের সমালোচকরা যুক্তি দেন যে এটি অস্বচ্ছ কারণ এর মাধ্যমে বিদেশী কোম্পানিগুলি এমনকি শেল কোম্পানিগুলিকে কাউকে অবহিত না করে বা তাদের নাম প্রকাশ না করেই ভারতের রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।নির্বাচনী বন্ড কোম্পানি আইনের সেই অংশটিকেও বাতিল করেছে যার অধীনে কর্পোরেটদের তাদের বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে তাদের রাজনৈতিক অনুদানের বিবরণ প্রকাশ করতে হত এখন তাদের আর তা করার প্রয়োজন হয় না।
এরফলে স্বচ্ছতার অভাব নির্বাচনী বন্ডের একটি প্রধান সমস্যা হয়ে রয়েছে।নির্বাচনী বন্ড সীমাহীন এবং বেনামী অর্থায়নের অনুমতি দেয়। এই স্বচ্ছতার অভাব রাজনৈতিক দলগুলিকে যেমন বিত্তশালী করেছে অন্যদিকে এই সব দাতারা রাজনৈতিক দলগুলির থেকে বিনিময়ে কি সুবিধা আশা করতে পারে সে সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
এক্ষেত্রে Electoral Bond কে নিয়ে আরেকটি উদ্বেগ হল অপব্যবহারের সম্ভাবনা। যথাযথ তথ্য ছাড়াই যেহেতু অর্থ দান করা যায় সেক্ষেত্রে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারে এবং যেকোনও রাজনৈতিক সুবিধা কেনার জন্য তা ব্যবহার করা যেতে পারে।দাতা ও গ্রহীতার জবাবদিহিতার অভাব শুধুমাত্র এই ঝুঁকিগুলিকে বাড়িয়ে তুলেছে।
নির্বাচনী বন্ডকে ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্ক রাজনৈতিক তহবিল নিয়ন্ত্রণে ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলির ত্রুটিগুলিকে তুলে ধরেছে।বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে Electoral Bond এর স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার আহ্বান সত্ত্বেও, সরকার এই উদ্বেগগুলি মোকাবেলায় খুব কম আগ্রহ দেখিয়েছে। নির্বাচনী বন্ডের প্রভাব শুধুমাত্র ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকেই ক্ষুণ্ণ করছে না বরং রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থাও নষ্ট করে দিচ্ছে।
বিরোধীদের নির্বাচনী বন্ডকে নিয়ে সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হল এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো বিপুল পরিমাণ অপ্রকাশিত তহবিল পেতে সক্ষম হচ্ছে যা নির্বাচনে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্য সুবিধা দিচ্ছে।সেই সাথে এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিকৃত করছে এবং সাধারণ নাগরিকদের কণ্ঠস্বরকে স্বাধীনভাবে প্রকাশে বাঁধা দিচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের তহবিল সংগ্রহকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এসবিআই-কে নির্বাচনী বন্ডের সব তথ্য নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission Of India )কে দেওয়ার কথা বলেছেন সেইসাথে ১৫ মার্চের মধ্যে ওয়েবসাইটে সব তথ্য নির্বাচন কমিশনকে আপলোড করতে হবে সেই নির্দেশও দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত । প্রধান বিচারপতি DY চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন রাজনৈতিক দলের তহবিলে কত টাকা জমা পড়েছে, তা জানাতে হবে সাধারণ মানুষকে। সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপ ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনাতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন