Kurmi Protest and Motua মতুয়ারা যা পেরেছে কুড়মিরা কি তা করে দেখাতে পারবে ?

উত্তরাপথ

ছবি-ইন্ডিয়া টুডে

মতুয়া (Motua) ও কুড়মি (Kurmi) আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গের বুকে হওয়া দুটি জাতি আন্দোলন। কুড়মিরা আন্দোলন শুরু করেছিল তাদের পুরাতন জাতিসত্তা ফিরে পাওয়ার জন্য।কুড়মিদের দাবী হল ১৯৫১ সালে স্বাধীনতার পর তাদের আদিবাসী তালিকা থেকে অন্যায় ভাবে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার যেন তাদের সেই পুরাতন জাতিসত্ত্বা  ফিরিয়ে দেয়। অন্যদিকে মতুয়া আন্দোলন ছিল নিম্নবর্ণের মানুষের জন্য ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠা সেই সাথে সামাজে তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন ব্যবসা বাণিজ্যের অধিকার, চিকিৎসার অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার সহ শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন।এবং একটি জাতিকে চন্ডাল গালি থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার আন্দোলন। মতুয়াদের এই আন্দোলনে তাদের ঐতিহাসিক জয় হয়।

এখন প্রশ্ন মতুয়ারা যেখানে তাদের এতবড় একটা আন্দোলন কোনও রকম বিশৃঙ্খলা ছাড়া শুধুমাত্র আইনি পথে  জয়লাভ করল সেখানে কুড়মিরা কেন তা পারছে না? কেন তাঁরা বারেবারে তাদের লক্ষ্য থেকে সরে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাড়ি আক্রমণ সহ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনা কুড়মি আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে । কুড়মিদের আন্দোলন ছিল এক অ-রাজনৈতিক আন্দোলন । কিন্তু বর্তমানে পুরো আন্দোলনের রাজনীতিকরন হয়ে গেছে। পুরো কুড়মি জাতি বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে গেছে এবং প্রতিটি ভাগের মাথায় রয়েছে একজন করে নেতা।  তথ্যে প্রকাশ সেই নেতারা আবার কোন না কোনও রাজনৈতিক দলের মদত পুষ্ট, যার ফলে আন্দোলনকারীদের এক্যমত্যে আসা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে মতুয়াদের পুরো লড়াইটাই একজন নেতার (শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের ) নেতৃত্বে। তাই মতুয়া আন্দোলন তার নিদিষ্ট লক্ষ্য থেকে সরে যায় নি।

তাছাড়া মতুয়ারা যেভাবে তাদের জাতিগত ঐক্য ধরে রেখে নিজেদের একটি শক্তিশালী ভোট ব্যাঙ্কে পরিণত করতে পেরেছে এবং নিজেদের দাবী অনেকাংশে পূরন করতে সক্ষম হয়েছে কুড়মিরা তা পারেনি। আজ পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৫০ লাখ কড়মির বসবাস তারপরও কুড়মিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভোট ব্যাঙ্কে পরিণত হয়ে রয়েছে।রাজনীতির উপর উঠে নেতারা একসাথে কাজ করতে পারছেনা। তাই আগামী দিনে কুড়মি আন্দোলনের ঐক্যের উপর নির্ভর করবে এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ ।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top