

নির্বাচনের মরসুমে, রাজনৈতিক বক্তৃতায় প্রায়শই আক্রমণাত্মক ভাষা এবং উত্তপ্ত বিতর্কের প্রাধান্য দেখা যায়।রাজনীতিতে নীতি ও কৌশল নিয়ে দ্বিমত থাকা এক অতি সাধারণ ব্যাপার।তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অবমাননাকর ভাষা এবং খারাপ শব্দের ব্যবহার তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে যেভাবে বেড়ে চলেছে তা উদ্বেগজনক।রাজনীতিবিদদের জনগণের কাছে তাদের বার্তা জানাতে এবং সমর্থন আদায়ের জন্য নির্বাচনী প্রচারে ভাষার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেই ভাষার ব্যবহারে যাতে শালীনতা বজায় থাকে সেই ব্যাপারেও একটা সীমাবদ্ধতা রাখতে হবে।রাজনীতিতে খারাপ শব্দের ব্যবহার নতুন নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান এবং ক্রমাগত ২৪/৭ সংবাদে থাকার চেষ্টা খারাপ শব্দের ব্যবহারকে আরও তীব্র করেছে। রাজনীতিবিদরা ক্রমাগত পরীক্ষা-নিরীক্ষার অধীনে থাকে এবং শিরোনাম থাকার ইচ্ছে প্রায়শই তাদের বিরোধী দলের সদস্যদের প্রতি খারাপ ভাষা ব্যবহার করতে প্ররোচিত করে।
রাজনীতিতে খারাপ শব্দ ব্যবহার করার প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হল এটি বাস্তব সমস্যাগুলি থেকে জনসাধারণকে দূরে নিয়ে যায়।বিবদমান সমস্যাগুলি সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করার পরিবর্তে, রাজনীতিবিদরা ভোটারদের মধ্যে বিভাজন এবং মেরুকরণকে উৎসাহিত করে।অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার এবং ব্যক্তিগত আক্রমণকে নিরুৎসাহিত করা উচিত কারণ এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পবিত্রতাকে ক্ষুণ্ন করে। ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং চরিত্র হত্যা কোনও নির্বাচনের লক্ষ্য হতে পারে না। রাজনৈতিক বক্তৃতায় ক্রমাগত খারাপ শব্দের ব্যবহার রাজনীতিবিদদের প্রতি জনসাধারণের খারাপ ধারনার সৃষ্টি করতে পারে। রাজনীতিবিদরা যখন নিম্ন স্তরের ভাষা প্রয়োগের দিকে ঝুঁকে পড়ে, তখন তা রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ও সম্মান নষ্ট হয়ে যায়, যা ভোটারদের মধ্যে উদাসীনতা এবং বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়।একবার আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করা হলে, ক্ষতি মেরামত করা এবং যারা বিক্ষুব্ধ হয়েছেন তাদের কাছ থেকে বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করা কঠিন হতে পারে।
রাজনীতিবিদদের মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে তাদের কথার শক্তি এবং প্রভাব রয়েছে এবং তাদের ভাষাতে সম্মান ও সভ্যতার স্তর বজায় রাখা উচিত, বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারের সময়। যদিও রাজনৈতিকনীতি এবং ধারণাগুলি নিয়ে একে অপরকে বিতর্ক এবং চ্যালেঞ্জ করতেই পারেন, এটা সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্যও বটে।কিন্তু এটি একটি গঠনমূলক এবং সম্মানজনক পদ্ধতিতে করা উচিত। একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, এবং সম্মানজনক নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ভারতে নির্বাচনী প্রচারের সময় ভাষা ব্যবহারের কিছু সীমাবদ্ধতা রাখা দরকার। রাজনীতিবিদদের দায়িত্বের সাথে ভাষা ব্যবহার করা উচিত, ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ, বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং বিরোধীদের প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত। এই সীমাবদ্ধতাগুলিকে বজায় রেখে, আমরা একটি উন্নয়নমুখী রাজনৈতিক বক্তৃতা প্রচার করতে পারি যা নেতিবাচকতা এবং বিভাজনের পরিবর্তে সমাজের আসল সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করবে।
আরও পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন