গুপ্তধন

বাস্তব আর কল্পনা যখন এক সূতোয় ভালোবাসার মালা হয়ে যায় …

সোমা : “তেঁতুল বটের কোলে দক্ষিনে যায় চলে” বলছি তুমি কি রবীন্দ্রনাথের গুপ্তধন খুঁজছো ,এই বুড়ো বট আর ছায়াভরা মায়া ভরা তেঁতূলের নীচে ?

অসীম : না তো সংকেত খুঁজছি রহস্য ভরা ভালোবাসার।

সোমা : তাই বুঝি .. তা কি পেলে শুনি ?

অসীম : পেলাম হরপ্পা মহেঞ্জোদাড়োর প্রত্নতাত্ত্বিক খোঁড়াখুঁড়িতে যে সুবিশাল সভ্যতার দলিল আমরা পেয়েছি , এই নিরালা নির্জন তপোবনে তাই পেলাম ।

সোমা : তোমার এই ছোট্ট আউটিং টার অর্থ ই হলো দূরের অনুভূতি খোঁজা । কাছের জনকে তো দেখতেই পাওনা। আসলে কি জানো ভালোবাসা যতক্ষণ অধরা ততক্ষণ ই তার সার্থকতা । আর ছেলেদের কাছে ভালোবাসা একটা আটপৌরে ব্যাপার , কিন্তু কি জানো একজন মেয়ের কাছে সত্যিকারের প্রেম এক পরম আবিষ্কার ।

অসীম: আমি বলি কি , চাঁদবেলায় জীবনের সাদা পাতায় যেমন করে দেখবে তুমি আমায় আমি ঠিক তেমনই।

সোমা: থাক হয়েছে , দু বছর ধরে দেখছি , এক ই রকম অগোছালো একটা মানুষ।

অসীম : হ্যাঁ তো , তোমার মেঘহীন মেদহীন ভালোবাসা আমাকে ঘর ভুলতে শিখিয়েছে , কি হবে শৃঙ্খলা বদ্ধ ভালোবাসায় বিবর্ন হয়ে , তারচেয়ে চলো না হারিয়ে যাই কালান্তরে ।

সোমা : না বাবা , আমার এখন অনেক কাজ । এরকম অজস্র কবিতার পোকা কিলবিল করুক তোমার মাথায় । আমি রিসোর্টে ফিরে যাই । ধূলো মাখা বিকেলের আকাশে আমি এতো কথার সমুদ্রে নাইতে পারবো না ।

অসীম : পড়ন্ত নদীর সাথে বচসা করে লাভ নেই ।

সোমা : কি ? আর একবার বলো —- আমাদের উদ্দাম ইচ্ছে সোনালী স্মৃতি আমাদের শোক যন্ত্রণা সব কি আমরা ভাগাভাগি করে নিই নি ? কি বাকি রেখেছি দিতে তোমাকে ? কখন যে তুমি বেরুবে তোমার কল্পনার বিষন্নতার দুয়ার ভেদ করে ….

অসীম: যেদিন অস্তগামী সূর্যের সোনালী আলো মেখে আমার মনের মানসী তার মনের আলো দিয়ে আমার সব কালিমা মুছে দেবে।

সোমা: চলো না লালমাটির গ্রামের মেঠো আলপথ ধরে হেঁটে যাই । কবিতার সাধনায় চলেছো অন্তবিহীন পথ , তা আমার সাথে না হয় সাত পা চলো ।

অসীম : সাত পা মানে সাত জন্ম । পারবো কি শেষ অবধি যেতে ?

সোমা : বাকি থাকা পথটা আমরা তো হাতে হাত রেখে হাঁটবো । তোমার এতো ভয় কিসের ?

অসীম : না আসলে আমি যে পথকে ভালোবেসেই আজ পথভোলা ।

সোমা : উফ বড্ড কথা বলে,,,

অসীম: হ্যাঁ তো , তোমার কথার জাদু আর সুরের জাদুতে কখন যেনো ঘুমিয়ে পরি তোমার ভালোবাসার আঁচলে । চাঁদের নরম আলো আর এই সবুজ শ্যামলিমা। শোনো না আজ আর রিসর্টৈ ফিরে কাজ নেই । এখানেই বেশ আছি ।

সোমা : ঐ দেখো ,,, দিগন্ত রেখায় লাল সূর্য মিশছে মাটির সাথে । এরা রোজ মেশে আবার দূর থেকে দূরান্তরে চলে যায় । এরকমই শেষ নিঃশ্বাসেও তুমি।
সবার চেয়ে অধিক অধিকারে ।

অসীম : আরে বাঃ , আমার গুপ্তধনের সংকেত মিলে গেলো তো । ভালোবাসার পৃথিবীতে উদার নীল আকাশ জুড়ে শুধু একটি মুখ আমাকে বারবার টানে , সে আমার চেতনায় মিশে , সে আমার উজ্জ্বল প্রেরনা ।

সোমা : থাক থাক হয়েছে,, এসব কথা শুনতে শুনতে জীবনটাই তেজপাতা,, তোমার টক ঝাল মিষ্টি,,ঐ ঝগড়ার সময় তখন তো আর মনে থাকে না ।

অসীম : আমার কাছে ভালোবাসা মানে রাগ দুষ্টুমি খুনসুটি অভিমান অনুরাগ বিরহ সব মিলে ।

সোমা : সে শুধু নিজের বেলায়,,বাকি আর একজনের পান থেকে চুন খুলেই একদম রক্ষে নেই।

অসীম : কখন থেকে হাঁটছি তো হেঁটেই চলেছি হাত ধরে আমার বনলতা সেনের সাথে। সে কি খেয়াল করেছে?

সোমা : হুম ।

অসীম : এতো ছোট্ট উত্তর। আচ্ছা আমার পেত্নী কি জানে যে এই মায়াবী আলোয় সে আরো মোহময়ী ।

সোমা :ইশ্ রে ,, আর খুশী করাতে হবে না , উদাসী সময়ে ভর করে থমকে আছে নৌকো ,চলো নোকোয় ভাসি।

অসীম : আমার অচিনপুরের পাখী , আমি তোমায় খুঁজতে পথ হারাই বারেবারে ।

সোমা: যেদিন আমি থাকবো না সেদিন নির্জন বালিয়াড়ি আর একফালি চাঁদে আমায় খোঁজো,, কেমন,,

অসীম : আমি আকাশ থেকে খসে পড়া এক মুগ্ধ পলক তারা । তুমি না থাকলে আমি দিশেহারা ।

সোমা : শুনছো,, দূরে কোথায় যেনো মন ভোলানো রাখালিয়া বাঁশি বাজছে , চলো না নদীর ওপারে যাই ।

অসীম: চলো …

লেখায় … সোমাসীম

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Gond Tribe: মধ্য প্রদেশে গোন্ড উপজাতির সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ

গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো: গোন্ড উপজাতি(Gond tribe) বিশ্বের বৃহত্তম উপজাতি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি। এটি ভারতের বৃহত্তম উপজাতি । এদের গায়ের রং কালো, চুল কালো, ঠোঁট মোটা, নাক বড় ও ছড়ানো। তারা অলিখিত ভাষা গোন্ডি ভাষাতে কথা বলে, যা দ্রাবিড় ভাষার সাথে সম্পর্কিত। গোন্ড উপজাতির একটি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, বিশ্বাস করা হয় যে তাদের শিকড় প্রাক-আর্য যুগে্র । গোন্ডদের সবচেয়ে গৌরবময় রাজা ছিলেন সংগ্রাম শাহ এবং দলগত শাহ, যারা ম্ধ্যপ্রদেশের গন্ডয়ানা রাজ্যের  বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেকগুলি দুর্গ তৈরি করেছিলেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে দলগত .....বিস্তারিত পড়ুন

Vitamin-D: ভিটামিন ডি’র সেবন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়

উত্তরাপথ: হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক সহ কার্ডিওভাসকুলার রোগগুলি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ।সম্প্রতি একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি সম্পূরকগুলি ৬০ বছরের বেশি বয়সী লোকেদের হার্ট অ্যাটাক সহ যে কোনও বড় ধরনের কার্ডিওভাসকুলার অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন ডি প্রায়ই "সানশাইন ভিটামিন" হিসাবে পরিচিত। এটি গ্রহণকারীদের মধ্যে স্ট্রোক সহ কার্ডিওভাসকুলার রোগ ৯% হ্রাস পেয়েছে । যা ২৮ জুন দ্য বিএমজে দ্বারা প্রকাশিত একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top