জীবন ও সমস্যা

অসীম পাঠকঃ মানুষ মরনশীল ও মননশীল জীব। যা আমাদের খুব গভীরভাবে নাড়া দেয় সুখদুঃখের দিক থেকেই হোক, জ্ঞান-অজ্ঞানের দিক থেকেই হোক, অথবা ইষ্টানিন্টের দিক থেকেই হোক, তাকে আমরা সহজে ভুলি না। তাকে নিয়ে আমাদের নানা রকম কৌতূহল, নানা রকম আগ্রহ, তাকে ঘিরে নানা দিক থেকে আমা- দের নানা রকমের আলোচনা। ঠিক যা আমাদের হয় সাহিত্যকে নিয়ে, কেননা সাহিত্যও আমাদের অতি গভীরভাবে নাড়া দিয়ে থাকে। আমা- দের সাহিত্য-আলোচনার কতো দিক, কতো ধরন, কতো দৃষ্টিকোণ, কতো শাখা-প্রশাখা।

এই সব আলোচনার কোনোটাই অবৈধ নয়। নিজ নিজ প্রসঙ্গ ক্ষেত্রে এর প্রত্যেকটাই মূল্যবান। কিন্তু এর সবগুলোকেই সমালোচনা বলা যাবে না। প্রশ্ন এই, ঠিক কোন ধরনের আলোচনাকে বলব সাহিত্যসমালোচনা? জীবন এবং সমস্যা এক সুরে বাঁধা …. মানুষ সমস্যা কে আমন্ত্রণ করে সেখান থেকে সে নিজেই মুক্তির পথনির্দেশ খোঁজে।

ডেনমার্কের যুবরাজ হ্যামলেট, নিজেকে প্রশ্ন করেছিলেন- জীবনধারণ না প্রাণত্যাগ শ্রেয়স্কর?
প্রতিরোধের থেকে দুঃখবরণ মহত্তর কি না, ব্যর্থতা, ক্লেশ ও পরাজয়ের গ্লানির চাইতে মৃত্যুর দুঃস্বপ্নময়
বিভীষিকা অধিক কাম্য কি না এ বিষয়ে কোনো স্থির সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্তও তিনি পৌঁছতে পারেননি। কিন্তু রাজপুত্র যদি হতেন অস্তিত্ববাদী যিনি তাঁর মতোই সংসারের উপহাসাত্মক কশাঘাতে জর্জরিত, তাহলে ওরুপ জিজ্ঞাসা অর্থহীন হতো, কারণ অস্তিত্ববাদীর মতে জীবন মরণের কোনো একটিকে বেছে নেওয়া সম্পূর্ণ কল্পনাবিলাস। তবু একথা বলা যায় যে, অস্তিত্ববাদের দৃষ্টিকোণ থেকে যাঁরা মানবিক অবস্থার মূল্যায়ন করেন, হ্যামলেট ছিলেন তাঁদের পূর্বসূরী। অবশ্য সঠিকভাবে বলতে গেলে অস্তিত্ববাদী একাধারে হ্যামলেট ও ডন কুইক্সটের সমন্বয়; তিনি নৈরাশদণ্ড প্রতিরোধকে ছদ্ম বীরত্বের মহিমায় মণ্ডিত ক’রে যুগপৎ বিলাস ও
উল্লাসে মুখর।
আতঙ্কের আনন্দময় রূপ দেখে অস্তিবাসী কল্পনাকে সত্যে পরিণত করেন। এই আশ্চর্য যাদুশক্তির জন্য তিনি এক হিসেবে সকলের প্রশংসার পাত্র।

জড়ের রহস্য মানুষ ভেদ করতে চায় যেন প্রাকৃতিক পরিবেশ তার আয়ত্তের মধ্যে আসে। প্রাণকে সে জানতে চায়, কারণ জৈব সত্তার দাসত্ব থেকে সে মুক্তি চায়। মনকে সে জানতে চায়, কারণ সে চায় মনের প্রচ্ছন্নবৃত্তিগুলো তার বশে থাকবে, তাকে নিয়ন্ত্রিত করবে না। নিজেকে তার জানার দুরন্ত কৌতূহল কেন? কারণ সে চায় নিজেকে নিজের আয়ত্তে রাখতে, আসক্তি-ভয়-ক্রোধ ইত্যাদির বন্ধন থেকে মুক্ত হতে।

জগৎকে জানার জন্য মনের মধ্যে মহাজিজ্ঞাসা কেন? জগৎটাকে তার কর্তৃত্বাধীনে রাখবার জন্য। মানুষের মধ্যে যিনি সৎ বা সত্য রূপে বিদ্যমান সেই নিত্যসত্তাই তাকে প্রেরণা দিচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশকে আয়ত্তের মধ্যে রাখতে, জগৎটাকে নিজের ইচ্ছানুসারে পরিচালিত করতে। এই সৎ এর প্রীতি থেকে তার আপনাকে জানার মহা জিজ্ঞাসা এবং এই আত্মজিজ্ঞাসা নিজেকে নিজের সম্পূর্ণ বশে রাখবার জন্য।

অন্তরের এবং বাহিরের সমস্ত বাধাবিঘ্নকে জয় করে মানুষ চায় নিজের নিয়ন্তা হতে, জড়জগৎকেও নিজের শাসনে রাখতে। এই প্রবণতা, এই প্রবর্তনা আসলে তো সচ্চিদানন্দেরই প্রচ্ছন্ন ইচ্ছাশক্তি। এখানেই মানুষ আত্মসমর্পণ করে আধ্যাত্মিক শক্তি বা পরা শক্তির কাছে। আমাদের ব্যক্তিসত্তা তো তাঁরই রূপ।

মানুষের চৈতন্য এবং শক্তি এক অবিচ্ছেদ্য সুরে গাঁথা। চৈতন্য যেখানে অজ্ঞানের আবরণে আচ্ছন্ন, – যেখানে আমরা স্পষ্ট করে নিজেদের মনকে জানিনে সেখানে শক্তির প্রকাশ হবেই ইচ্ছার সঙ্গে ইচ্ছার, ভাবের সঙ্গে ভাবের, – স্বার্থের সঙ্গে স্বার্থের সংঘর্ষের আসুরিকতার মধ্যে।

মানুষ এখন মনের ও প্রাণের যে স্তরে এসে পৌঁচেছে যেখানে চৈতন্যের এবং শক্তির অপূর্ণতা থেকে অনেক বাধা দেখা দিয়েছে।

মূল বাধা হল মানুষ তার নিজস্ব সত্তার অতি অল্প অংশকেই জ্ঞানের সীমানার মধ্যে আনতে পেরেছে। সে তার মনকে, প্রাণকে এবং শরীর সত্তাকে যেটুকু জানে সেই জ্ঞান খুবই ভাসা-ভাসা। তার ব্যক্তিত্বের বেশীর ভাগই তার দৃষ্টি পথের বাহিরে।

আপনাকে যে সে জানে তার অনুপাতে অজানার পরিমাণ অনেক, অনেক বেশী। মানুষেরই এই অবচেতন মনের, অবচেতন প্রাণের এবং অবচেতন দৈহিকসত্তার প্রচ্ছন্ন প্রবণতাগুলিই নেপথ্যের অজানা থেকে শাসন করছে তাকে। যে হেতু আমাদের সত্তার অজানা অংশ জানা অংশের অনুপাতে বৃহত্তর এবং অধি কতর জোরদারও বটে সেই হেতু …
“We are governed by the subconscient and sublimi- nal even in our conscious existence and in our very self-mastery and self-direction we are only instruments secms of us to what the In- conscient within us.”
আমরা যখন মনে করি নিজেদের সম্পর্কে আমরা খুবই সচেতন … আছি তখনও কিন্তু আমরা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছি আমাদের সত্তার সেই বৃহত্তর অংশের দ্বারা যা আমাদের ধরাছোঁয়ার জানাশোনার বাইরে। যখন আমরা মনে করি আমাদের জীবন-তরীর হাল রয়েছে আমাদের নিজেদের হাতে তখনও কিন্তু আমরা যন্ত্র ‘তারই’ হাতে যাকে আমরা মনে করছি অন্তরের অচেতন সত্তা।

যিনি সৎ তিনি চৈতন্য এবং শক্তি।
স্বভাবতঃই কিন্তু চৈতন্য এবং শক্তি ছাড়া আরও কিছু হচ্ছে সৎ এবং এই আরও কিছু হচ্ছে আনন্দ।

এই আনন্দের মধ্যে চৈতন্য এবং শক্তি মিলিত হয়ে এক হয়ে যাচ্ছে, পরিণামে একটি চূড়ান্ত সার্থকতায় পৌঁছচ্ছে। যিনি সৎ তাঁর চিৎ শক্তি থেকে এই প্রাণের উদ্ভব। এই প্রাণই ক্রম-বিকাশের পথে ধাপে ধাপে উঠছে পরিপূর্ণতার দিকে।

আমরা যদি নিজেকে না জানি তবে তো আত্মপ্রকাশের চূড়ান্ত সার্থকতায় কখনোই পৌঁছাবো না। প্রাণের মধ্যে যে চৈতন্য অনুসৃত হয়ে আছে সেই চৈতন্যের উপরেই তো নির্ভর করছে প্রাণ নিজেকে কি পরিমাণে অসীমের মধ্যে, আলোর মধ্যে, আনন্দের মধ্যে, মুক্তির মধ্যে, অমৃতত্বের মধ্যে বিকশিত করতে পারবে। কারণ- As the consciousness is, SO will the force be ….
আমাদের চৈতন্য যে-পরিমাণে অবারিত হবে, অজ্ঞানের আবরণ থেকে আমাদের শক্তিও সেই পরিমাণেই বাড়তে থাকবে। যেখানে আমরা জানি নিজেদের অসীম বলে, আমাদের চৈতন্য যেখানে – সীমিত নয়, অতিক্রম করে আছে ও আমাদের সমস্ত কর্মকে সেখানে আমাদের শক্তিও জ্ঞানে, কর্মে, ভাবে নিজেকে ক্রমাগত অবারিত করে চলবে। সেই শক্তি কোথাও গিয়ে ফুরিয়ে যায় না।

পক্ষান্তরে আত্ম-জ্ঞান যেখানে আচ্ছন্ন, – নিজের মধ্যে অসীমকে যেখানে জানিনে, নিশিতে পাওয়া মানুষের মতো সেখানে আমরা জীবন যাপন করি আধো-ঘুমে, আধো জাগরণের মধ্যে সেখানে সেই আত্ম ঘাতিনী বিস্মৃতি জীবনকে কি পরিমাণে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করতে পারে তার প্রমাণ আমাদের চারিদিকের এই স্বার্থের সঙ্গে স্বার্থের সংঘর্ষের মধ্যে, বর্ষে বর্ষে এই কোলাকুলির এবং বিবদমান জাতিগুলির conflict and confrontation এর মধ্যে। উদ্ভাসিত চৈতন্যের মধ্যে যেখানে এক এবং বহু উভয়েরই স্বীকৃতি, যেখানে চৈতন্য একসঙ্গে জানে সমষ্টির স্বভাব, স্বধর্ম এবং অধিকারকে এবং ব্যষ্টিরও স্বভাব, স্বধর্ম এবং অধিকারকে, আর এই চেতনা থেকে ব্যক্তির ও সমষ্টির মিলন ঘটেছে পারস্পরিক ঐক্যের মধ্যে, যেখানে এক নিজেকে জানে ব’লে এবং বহু আপনাদিগকে জানে এক ব’লে, সেখানে শক্তি রূপ নেবে প্রাণে , যে প্রাণ ঐক্যের ধর্মকে স্বেচ্ছায় মেনে নিয়েও প্রত্যেক বস্তুকে তার স্বভাবের ও স্বধর্মের বৈচিত্র্যের মধ্যে সার্থক ক’রে তুলবে। সেই প্রাণই বহু হৃদয়ের এবং দেহের মধ্যে লীলায়িত হবে একই আনন্দরূপের লীলায়নে বহ মানসে একই চিৎ-শক্তি রূপে।

এই যে জীবনের রূপরেখা তা একটা নদীর মতো , সময়ে সাথে সাথে তার গতিপথ যেমন শ্লথ হয় না ,কোথাও বাধা পেলে সে দিক পরিবর্তন করে , তেমনই সমস্যা একটা মানুষের গতিকে সাময়িক বিভ্রান্ত করলেও সে থেমে থাকে না।
যেমন একজন শিল্পীর মনের রঙে যতক্ষণ বাস্তব রঙিন হয়ে ন উঠলো ততক্ষণ তার সৃষ্টি শুধু যান্ত্রিক অনুকরন। যে আলোকে কবি বলেছেন , “The light that never was on sea on land “… তাই চিত্র ফটোগ্রাফি নয় , সাহিত্য নয় সত্যের বর্নহীন বৈচিত্র্য হীন অনুগমন, গান নয় শুধু স্বরলিপির নিখুঁত অনুসরন ।
সব কিছুর মিলিত যোগফলের নাম জীবন।
আর সমস্যা সঙ্কুল পথে সংস্কৃতি ও সভ্যতা অতীন্দ্রিয় চেতনায় আধ্যাত্মিক আদর্শের কাছে নতজানু। যুক্তিবাদী দার্শনিকদের বিমূর্ত ধারনায় হিং টিং ছট সব শব্দব্রহ্মে পরিনত।
বিজ্ঞান দর্শন বেদ বেদান্ত এসব পাঠৈর অর্থ ই হলো জীবনকে রুচিশীল করা , এবং জীবনের হোমাগ্নি আলোয় ঈশ্বরের কাছে সমস্ত সমর্পন করা।
সমস্যা না থাকলে আর জীবন কেন , অর্থ কি মানব জীবনের ?শূন্যতার বিনাশের জন্য আবশ্যিক অবস্থাই স্বাতন্ত্র্য।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top