ডাইরী

অনসূয়া পাঠকঃ

স্টেশনের ভিড় পেরিয়ে আবীর ট্রেনের ভেতরে নিজের সিটে গিয়ে বসে। সিটের নীচে নিজের ব্যাগটা রাখতে গিয়ে সে একটা গোলাপি রঙের ডাইরী দেখতে পায়। ডাইরীটা তুলে সে একমনে তাকিয়ে থাকে। হাল্কা গোলাপি তার ফ্রন্ট কভারে একগুচ্ছ রঙ বেরঙের ফুল ও একটি নীল প্রজাপতির ছবি। এটা দেখেই তার মনে হয় যে ডাইরীর অধিকারিণী কোন একজন মেয়ে। অজানা কারো এই ডাইরীটা তার খোলা ঠিক হবে কি না এটা ভাবতেই ভাবতেই সে খুলে ফেলে। ট্রেন তখন চলতে শুরু করেছে। ডাইরীর প্রথম পাতায় একটা ময়ুর পালক ও কালী পূজোয় হাজার টাকা চা়দা দেওয়া একটা রসিদ। এটা দেখে আবীরের মনে হয় মেয়েটি অত্যন্ত ভক্তিমতি। পরের পাতা ওল্টালে সে দেখে লাল কালিতে স্পষ্ট লেখা “অরুনিমা”। পরের পাতায় ওপরে একটা হেডিং জ্বল জ্বল করছে , প্রথম প্রেম । আবীরের ডাইরী পড়ার আকর্ষণ বেড়ে যায়।
” ডিয়ার ডাইরী
আজকে একটা টপ সিক্রেট তোমার সাথে শেয়ার করতে চলেছি, দশ বছর আগের কথা- আমার বাবা স্টেট ব্যাংকে চাকরী করেন এবং একবার তাঁর বদলি হয় মল্লরাজবংশের স্মৃতি বিজড়িত মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরে। আমরা সবাই তখন ওখানে শিফট করে যাই। কারন বাবাকে ছাড়া থাকার কথা ভাবতেই পারি না। ওখানকার একটা স্কুলে আমি ভর্তি হই। স্কুলের প্রথম দিন আমার দেখা হয় একটি ছেলের সাথে। কে জানে কেনো নব্বই জনের ক্লাশের মধ্যে ওকে এমন লাগছিলো যেনো রাতের আকাশের চাঁদ। ইচ্ছে করছিলো যে ওর কাছে গিয়ে ওর নাম জানতে চাই। কিন্তু পারিনি। পরে ওর নাম জানতে পেরেছিলাম, যখন বিনয় বাবু ওকে ডাস্টার আনতে স্টাফরুমে পাঠিয়েছিলেন। পড়াশোনায় ভালো নম্র মেধাবী , দেখতেও সুন্দর , মনে হতো ওর সাথে বন্ধুত্ব করতে পারলে বেশ হয়। কিন্তু ভাবাটা যতো সহজ কাজে পরিনত করাটা ততটাই কঠিন। ক্লাশে নানান জিনিস নিয়ে দু একটা কথা হতো। তারপর এলো সেই কাঙ্ক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ, বিশ্বকবির জন্মদিবস উদযাপন। অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রতি ক্লাসের গান আবৃত্তি জানা ছেলে মেয়েদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকের জন্য ও কিছু ছাত্র ছাত্রী স্যাররা নিচ্ছিলেন। আমাদের ক্লাস থেকে আমি আর ও দুজনেই সুযোগ পেয়েছিলাম। কে কে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে সেই লিস্ট ঠিক করার সময় গানে ওর নাম দেখে আমি বলেছিলাম , বারে তুই গান ও জানিস ? ও বলেছিলো তুই যদি বক্তব্য রাখতে পারিস তাহলে আমি কেনো পারবো না গান গাইতে । আমি বলেছিলাম , নারে এমনই জিজ্ঞেস করছিলাম। তারপর ও বললো , আচ্ছা তোর পছন্দের রবীন্দ্র সংগীত কোনটা ? একটু অবাক হয়ে বলেছিলাম, ওগো বিদেশিনী। কো ইনসিডেন্ট কিনা জানি না , তবে রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিন ও স্টেজে বলেছিলো , যে রবীন্দ্রনাথের সব গান ই তার প্রিয় তবে যে গানটি তার মনকে বারেবারে নাড়া দেয় তা হল , ওগো বিদেশিনী। ওর গলায় গানটা অপুর্ব সুন্দর লাগছিলো। তারপর ক্লাশে মাঝে মাঝে নানান বিষয় নিয়ে কথা হতো। এরপর বার্ষিক পরীক্ষায় আমি টপার হয়েছিলাম আর ও হয়েছিল সেকেন্ড। রেজাল্ট আউটের দিন আমার সাথে হ্যান্ডশেক করে ও বলেছিল, কনগ্রাচুলেশন টপার , নেক্সট টাইম আরও ভালো করতে হবে। কিছুদিন পর আমি শম্ভু স্যারের কাছে বাংলা টিউশনিতে ভর্তি হলাম। স্যার বিকেল প়াচটায় আমাদের ব্যাচটা শুরু করতেন। আর ওই বিল্ডিংয়ের অপোজিটে ও রমেশ বাবুর কাছে কেমিস্ট্রি পড়তে আসতো। আমি যে কলোনীতে থাকতাম সেখান থেকে আর কেও শম্ভু স্যারের কাছে পড়তে যেতো না। আর শীতের সন্ধ্যা মানে টিউশনি শেষ হতে না হতেই অন্ধকার নেমে আসতো। যদিও ওর টিউশনি সাড়ে প়াচটায় শেষ হয়ে যেতো কিন্তু প্রতিদিন আমার জন্য ও ছটা অবধি দা়ড়িয়ে থাকতো। আমার বাড়ির কাছাকাছি যে ওর বাড়ি তাও কিন্তু ছিলো না। তবুও ও কিছু না কিছু বাহানায় আমাকে টিউশনির সপ্তাহে তিনটা দিন বাড়ির গেট অবধি পৌঁছে দিতো। বর্ষায় আবহাওয়া খারাপ হলে বা ঝমঝম বৃষ্টি পড়লে আমার বারন করা সত্ত্বেও ও আমাকে বাড়ি অবধি পৌঁছে দিতো। একবার আমি ও মা মামাবাড়ি যাবো বলে বাস স্ট্যান্ড এ দাঁড়িয়ে আছি এমন সময় দেখি আমার পাশে ও দাঁড়িয়ে। ওকে দেখে আমি জিজ্ঞেস করলাম , তুই এখানে ? ও বললো ওর এক বন্ধুর দাদার বিয়ে , সেখানে যাবে বলে বাস ধরতে এসেছে। আমাকে ওর সাথে কথা বলতে দেখে মা বলে একে চিনিস নাকি তুই ? আমি বলি হ্যাঁ , আমরা এক ক্লাশে পড়ি। ও মাকে প্রনাম করে। ও প্রনাম করতেই মা খুশিতে গদগদ হয়ে আমার দিকে তাকায় । ভাবখানা এরকম যেনো , দেখে শিখ, কেননা প্রনামটা আমার হয়ে ওঠৈ না। মা ওকে জিজ্ঞেস করে তোমার বন্ধুর দাদার বিয়ে কোথায় হচ্ছে ? ও থতমত খেয়ে বলে এতো তো জানিনা কাকীমা, বাস স্ট্যান্ডে বন্ধুর নিতে আসার কথা , তারপর দেখি কোথায় নিয়ে যায়। বাস এলে আমরা সবাই তাতে উঠে পড়ি। বাসে একটা সিট ফাঁকা ও মাকে সেটাতেই বসতে বলে । আমরা দাঁড়িয়ে থাকি । পরের স্টপেজে দুটো সিট ফাঁকা হলে আমরা সেখানে বসে পড়ি। এমনিতে আমার বাসের জার্নি একদম পছন্দ নয়। কিন্তু সেদিন কেনো জানিনা মনে হয়েছিলো , এই পথ যদি না শেষ হয় । তারপর পথ একসময় শেষ হতেই আমরা নেমে পড়ি। বাসস্ট্যান্ড এ কাওকে দেখতে না পেয়ে আমার মা বলে তোমার বন্ধু কোথায় ? ও বলে সেটাই তো কাকীমা দেখছি না , তবে ঠিক চলে আসবে একটু দেরী হচ্ছে হয়তো । তারপর লালমাটির মেঠো রাস্তা ধরে আমি আর মা মামাবাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করি। ওখানে পৌঁছনোর পর হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হতেই আধঘণ্টা পেরিয়ে যায় । তারপর আমার ভাই আমাকে বলে চল তোকে আমাদের সব্জী বাড়িটা দেখিয়ে আসি, দেখবি কতরকম সব্জী হয়েছে। সব্জী বাড়ি থেকে বাস স্ট্যান্ড পরিষ্কার দেখা যায়। ওখান থেকে দেখি ও এখনও সেই বাস স্ট্যান্ড এ দাঁড়িয়ে। তারপর বিষ্ণুপুর যাবার একটা বাস আসতেই ও উঠে পড়ে। আমার তখন বুঝতে বাকি থাকে না যে ও আমার জন্য ই এসেছিলো। আমি শুধু একটু মুচকি হাসি। প্রায় ই ফ্রি পিরিয়ড থাকলে ও আমাদের সবাইকে গান শোনাতো। খুব ভালো গিটার ও বাজাতে পারতো। আমার জন্মদিনে ও আমাকে একটা কালো রঙের ফাউন্টেন পেন গিফট করেছিলো যার উপর সাদা কালিতে একটা ইংরেজি এ অক্ষর ছিলো। কেননা ও জানতো পেন কালেকশনে আমার দুর্দান্ত নেশা। আর ওর জন্মদিনে আমি গিফট করেছিলাম একটা নীল রঙের মাউথ অর্গান। বলেছিলাম তোর মাউথ অর্গান বাজানোর ইচ্ছা পূর্ণ হোক। শুরু কর এটা দিয়ে। কিছুদিন পর বাবার বদলি হয়ে যায় অন্য জায়গায়।
যেদিন আমরা চেনা বিষ্ণুপুর ছেড়ে চলে যাচ্ছিলাম সেদিন স্টেশনে দাঁড়িয়ে ওকে বলেছিলাম , ভুলে যাসনা যেনো। ও চোখে চোখ রেখে বলেছিল না । কিন্তু তুই মনে রাখবি তো ? আমি বলেছিলাম সারাজীবন।
একবুক ভালো লাগার স্মৃতি নিয়ে আমরা বিষ্ণুপুর ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। তারপর নাম্বার চেঞ্জ মোবাইল হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি সব কারনে আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ওকে একটা চিঠিও লিখেছিলাম যার উত্তর আজো আসে নি। তবে উত্তর আসুক বা না আসুক আমি জানি , রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে। কে জানে ও এখন কোথায় কেমন আছে আমাকে মনে রেখেছে কি না “….
আবীর এতক্ষণ ভাবতন্ময় হয়ে পড়ে চলেছিলো মিষ্টি প্রেমের একটা অসমাপ্ত গল্প। এরপর দেখে ডাইরীর বাকি পাতাগুলো ফাঁকা। শুধু শেষ পতায় মেয়েটির ঠিকানা লেখা আছে।
আবীর পরের স্টেশনেই নেমে পড়ে। এবং ডাইরী টা ফিরিয়ে দেবার জন্য অরুনিমার ঠিকানায় পা বাড়ায় ।
ডাইরীর সেই ঠিকানা তাকে একটি সাদা রঙের দোতলা বাড়ির সামনে দাঁড় করায় । গেট খুলে ভেতরে ঢোকে। গোটা বাড়িটা সুন্দর ফুলে সাজানো। একটা মিষ্টি গন্ধ যেনো ভাসছে বাতাসে। একজন মধ্য চল্লিশের মহিলা তাকে জিজ্ঞেস করে , আপনি কে , এখানে কি দরকারে ? আবীর তাকে বলে যে অরুনিমাকে ডেকে দিতে , একটা জিনিস দেওয়ার ছিলো। মহিলা সেখান থেকেই হাঁক দেয়, অরুনিমা কোথায় গেলি দেখ কে একজন খু়জছে তোকে। দূর থেকে অরুনিমা বলে কে গো ? মহিলা বলে আজকের বিয়ে বাড়িতেও তোদের অনলাইনে অর্ডার আসছে, দেখ ডেলিভারি বয় হবে হয়তো। আবীর একটু মুচকি হাসে, দেখে চারদিকে উৎসব মুখর খুশির পরিবেশ। এরপর ভেতর থেকে হলুদ রঙের শাড়ি পরে অরুনিমা আসে। অরুনিমা আবীরের সামনে দাঁড়িয়ে বলে , বলুন কিছু বলছেন ? আবীর অরুনিমার দিকে ডাইরীটা এগিয়ে দিয়ে বলে , এটা আপনার ? অরুনিমা ডাইরীটা হাতে নিয়ে অবাক হয়ে বলে , হ্যাঁ এটা আমার ই । আপনি কোথায় পেলেন ? এটা তো হারিয়ে গিয়েছিলো , আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেবো … আবীর বলে ধন্যবাদটা এখন তোলা থাক, তবে নিজের জিনিস সাবধানে রাখবেন এটুকুই। অরুনিমা বলে আসুন বসুন ভেতরে , চা বা কফি কি পছন্দ বলুন। আবীর বলে আজ থাক হবে কোনোদিন। এবার আবীর গেটের দিকে পা বাড়ায়। অরুনিমা সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠার পথে ডাইরীর পাতাগুলো দেখতে থাকে , দেখে ও যেখানে লিখেছিলো , আমাকে মনে রেখেছে কিনা … তার নীচে লাল কালিতে লেখা , হ্যাঁ সব মনে আছে। অরুনিমা অবাক হয়ে গেটের দিকে তাকায়, দেখে আবীর মোরাম বিছানো পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পকেট থেকে একটা নীল রঙের মাউথ অর্গান বের করে বাজাতে বাজাতে যাচ্ছে। আবীরের দৃষ্টি সামনের দিকে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়

উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে।  সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top