

নাব্তা প্লাইয়াতে অবস্থিত ৭,০০০ বছর পুরনো পাথরের বৃত্তটি গ্রীষ্মকালীন অয়নান্ত (Summer solstice) এবং বার্ষিক মৌসুমি বায়ুর আগমনকে অনুসরণ করত। এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম পরিচিত জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত স্থান। ছবিটি Discovery Magazine-এর X হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত|
ড. সায়ন বসুঃ অলিম্পিক, ক্রিকেট – ফুটবলের বিশ্বকাপ যেমন প্রতি চার বছর অন্তর এক একটি দেশে হয়, ঠিক তেমনই আরোও একটি আসর বসে প্রতি তিন বছর অন্তর| এ হলো জ্যোতির্বিজ্ঞানের আসর যার নাম ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (International Astronomical Union বা IAU) জেনারেল অ্যাসেম্বলি| এটিকে সংক্ষেপে IAU-GA বলা হয়ে থাকে| দু’সপ্তাহ ব্যাপী এই আসর এবার বসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে | ভারতে IAU-GA আয়োজিত হয় প্রায় ৪০ বছর আগে ১৯৮৫ আগে নতুন দিল্লীতে| কোভিড অতিমারির পরে ২০২২ সালে IAU-GA অনুষ্ঠিত হয় কোরিয়ার বুসান শহরে এবং সেখানেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বেছে নেওয়া হয় ২০২৪ সালের আয়োজক হিসেবে|
IAU এর ইতিহাস প্রায় একশো বছরের পুরনো | IAU-এর পথচলা শুরু ১৯১৯ এর ২৮ জুলাই বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে, যদিও ফ্রান্সের প্যারিস শহরে এর মূল কার্যদপ্তর| ১৯১৯ এ IAU প্রতিষ্ঠার সময় হাতে গোনা কয়েকটি দেশ এর সদস্য ছিল| সেগুলি হলো বেলজিয়াম, ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন, আমেরিকা, ইতালি, জাপান, কানাডা এবং হল্যান্ড | বর্তমানে IAU এর সদস্য ৯০টি দেশ | যে সমস্ত প্রথিতযশা বিজ্ঞানীরা যুক্ত ছিলেন IAU এর জন্মলগ্ন থেকে তাঁরা হলেন – George Ellery Hale (আমেরিকা), Benjamin Baillaud (ফ্রান্স), Arthur Eddington এবং Frank Dyson (গ্রেট ব্রিটেন)| এঁরা সবাই নিজের নিজের গবেষণা ক্ষেত্রে স্বনামধন্য |
অনেকেই ভাবতে পারেন যে এতো মহাদেশ এবং দেশ থাকতে শেষে আফ্রিকা মহাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা কেন ? এখানে বলে রাখা ভালো যে, আফ্রিকায় জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাস প্রায় ৭,০০০ বছর আগের থেকে শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ মিশরের নাব্তা প্লাইয়া (Nabta Playa) নামক স্থানে মানুষ আকাশ পর্যবেক্ষণ শুরু করেছিল। নাব্তা প্লাইয়ার প্রস্তর স্থাপনা, যা ৭,০০০ থেকে ৬,০০০ বছর পুরনো, সূর্যের গতি এবং নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হতো। এটিকে প্রাচীন আফ্রিকার প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞানের উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়।এখানে প্রস্তর স্থাপনা এবং স্তম্ভগুলির একটি বিশেষ বিন্যাস পাওয়া গেছে, যা সূর্যের এবং নক্ষত্রমণ্ডলের গতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য তৈরি বলে মনে করা হয়। এই স্থানটি আফ্রিকার প্রাচীনতম জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি Stonehenge-এর মতো প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যাগত স্মৃতিস্তম্ভগুলির সাথে তুলনা করা হয়।
এরপর আসে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা, প্রায় ৫,০০০ বছর আগে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মিশরীয়রা নক্ষত্র, সূর্য এবং চন্দ্র পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ক্যালেন্ডার এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য জ্যোতির্বিদ্যার ব্যবহার শুরু করে। সেই সময়, প্রাচীন মিশরীয়রা আকাশ পর্যবেক্ষণ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানকে ধর্মীয় ও দৈনন্দিন জীবনের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত করেছিল। তারা খেয়াল করেছিল নক্ষত্রমণ্ডল, চন্দ্র চক্র এবং সূর্যের গতি। মিশরের গিজার পিরামিড এবং কার্নাক মন্দিরের নকশায় জ্যোতির্বিজ্ঞানিক ধারণা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন তারা সূর্য ও নক্ষত্রের স্থান অনুযায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছিল। সিরিয়াস (Sirius) তারার উদয় এবং নীল নদের বার্ষিক বন্যার মধ্যে সম্পর্কটি মিশরীয়দের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মিশরীয়রা সৌর ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে ৩৬৫ দিনের বর্ষপঞ্জি তৈরি করেছিল, যা আধুনিক ক্যালেন্ডারের ভিত্তি।
ইসলামিক স্বর্ণযুগে, বিশেষ করে ৮ম থেকে ১৪শ শতাব্দীর মধ্যে, উত্তর আফ্রিকা জ্যোতির্বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মরক্কো এবং আলজেরিয়ার মতো দেশগুলোতে অনেক বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদরা কাজ করেছিলেন। যেমন আল-বাত্তানি (জন্ম ৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে হাররানে যেটি বর্তমান তুরস্ক), যিনি তাঁর বেশিরভাগ সময় আলজেরিয়ায় কাটিয়েছেন।আল-বাত্তানি একজন অসাধারণ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ যিনি সূর্য বছরের সঠিক হিসাব ৩৬৫ দিন, ৫ ঘণ্টা, ৪৬ মিনিট, এবং ২৪ সেকেন্ড হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। ইবনে ইউনুস (জন্ম ৯৫০ খ্রিস্টাব্দে কায়রোতে), তাঁর কাজ মরক্কো ও আলজেরিয়ার শিক্ষাবিদদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। এছাড়াও ছিলেন ইবনে আল-জারকালী, আল-কাবিসী, আল-ইদ্রিসি|
তৎকালীন বাগদাদ, দামেস্ক এবং কায়রোতে অবস্থিত জ্ঞানকেন্দ্রগুলোর সাথে তাদের নিবিড় যোগাযোগ ছিল। মরক্কোর বিখ্যাত শহর ফেস এবং মারাকেশ-এ জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্র ছিল। সেখানে জ্যোতির্বিদ্যাগত যন্ত্র, যেমন অ্যাস্ট্রোলেব এবং সান-ডায়াল (সূর্য ঘড়ি) তৈরি করা হয়েছিল। এই সময়ে মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্রিক এবং ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাজ অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করেন এবং সেই জ্ঞানের প্রসার ঘটান।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক যুগের শুরুর দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার সূচনা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি (South African Astronomical Osbervatory), যা SAAO নামে পরিচিত, এটির ইতিহাস Cape of Good Hope (উত্তমাশা অন্তরীপ)-এ ১৮২০ সালে প্রতিষ্ঠিত রয়্যাল অবজারভেটরি এর সাথে শুরু হয়, যা আফ্রিকার প্রথম বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান| ১৮২৯ সালে এটির মূল ভবনগুলি তৈরি করতে খরচ হয় আনুমানিক ৩০,০০০ পাউন্ড যার আজকের বাজার মূল্য ৩.৩ মিলিয়ন পাউন্ডের সমান | থমাস ম্যাকলিয়ার ১৮৬৯ সালে কেপ অফ গুড হোপ এ মেরিডিয়ানের একটি বর্গমিটার পরিমাপের জন্য রয়্যাল মেডেল লাভ করেন এবং ডেভিড গিল ১৯০৩ সালে সৌর ও নক্ষত্রের পারাল্যাক্স নিয়ে গবেষণার জন্য এবং কেপ অফ গুড হোপের রয়্যাল অবজারভেটরির সক্রিয় পরিচালনার জন্য দ্বিতীয়বারের মতো এই মেডেল পান। রিপাবলিক অবজারভেটরি, জোহানেসবার্গ, ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে প্রাচীন রয়্যাল অবজারভেটরি, কেপ অফ গুড হোপ এর সাথে একত্রিত হয়ে SAAO গঠন করে। ১৯৭৪ সালে রাডক্লিফ অবজারভেটরি এর টেলিস্কোপটি কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (CSIR) দ্বারা ক্রয় করা হয় এবং সাদারল্যান্ড এ স্থানান্তর করা হয়, যেখানে এটি ১৯৭৬ সালে পুনরায় কাজ শুরু করে। SAAO ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দক্ষিণ আফ্রিকার CSIR এবং যুক্তরাজ্যের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ কাউন্সিল (SERC) এর মধ্যে একটি যৌথ চুক্তির ফলস্বরূপ। এর সদর দপ্তর পুরনো রয়্যাল অবজারভেটরির স্থানেই অবস্থিত, যেখানে প্রধান ভবন, অফিস, জাতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান গ্রন্থাগার এবং কম্পিউটার সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে SAAO ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন (NRF) এর ব্যবস্থাপনার অধীনে রয়েছে, যা পূর্বে ফাউন্ডেশন ফর রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট (FRD) নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭৪ সালে প্রিটোরিয়ার রাডক্লিফ অবজারভেটরি বন্ধ হলে, CSIR ১.৯-মিটার রাডক্লিফ টেলিস্কোপ ক্রয় করে এবং এটি সাদারল্যান্ড-এ স্থানান্তর করে। সাদারল্যান্ডে আফ্রিকান মহাদেশের সবথেকে বড় মাপের অপ্টিকাল টেলিস্কোপও আছে| জ্যোতির্বিজ্ঞানের এতো ইতিহাস যে দেশ এবং মহাদেশের সাথে জড়িয়ে সেখানে IAU জেনারাল অ্যাসেম্বলি শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৬ বছর লেগে গেলো প্রথমবার এই কনফারেন্স আয়োজন করতে সেটাই বড় আশ্চর্যের!
যাই হোক এবারের এই আসর বসেছিল কেপটাউন-এর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (ICC)| এই সেন্টারটি প্রায় ৫ লক্ষ স্কোয়ার ফুট জায়গার ওপর নির্মিত এবং এর মধ্যে অবস্থিত এক একটি অডিটোরিয়ামে প্রায় ১,৩০০ জনের বসার জায়গা আছে| এবারের IAU-GA এর আসর বসেছিল ৬-১৫ অগাস্ট| পৃথিবীর ১০০টিরও বেশী দেশ থেকে প্রায় ২,৫০০ জন জ্যোতির্বিজ্ঞানী অংশগ্রহণ করেছিলেন এবারের এই কনফারেন্সে|
IAU-GA এর ইতিহাসে এই প্রথমবার শুধুমাত্র সারসংক্ষেপ (abstract) জমা পড়েছিল ৩,০০০ এর বেশী! এই সারসংক্ষেপগুলিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দু’ভাগে ভাগ করা হয় – মৌখিক বক্তৃতা এবং পোস্টার প্রেজেন্টেশান| আমার গবেষণাটি মৌখিক বক্তৃতার জন্যে নির্বাচিত হয়েছিল যেটি মূলত কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে| বক্তৃতায় আমি দেখিয়েছিলাম, কি ভাবে অত্যন্ত কাছাকাছি থাকা দুটি কৃষ্ণগহ্বর মহাকর্ষীয় তরঙ্গ বিচ্ছুরণ করতে পারে| এরই মধ্যে একদিন নোবেলজয়ী অধ্যাপক Brian Schmidt এর সাথে একান্ত আলাপচারিতার সুযোগও এলো! এখানে বলে রাখা ভালো যে ভারতের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে গবেষকরা এসেছিলেন তাদের কাজ সবার সামনে তুলে ধরতে এবং তাদের মধ্যে বাঙালীদের সংখ্যাটা বেশ বড় যেটা বাঙালী হিসেবে আমার কাছে বেশ গর্বের| প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কনভেনশন সেন্টারের বিভিন্ন কনফারেন্স রুমে চলছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানান গবেষণার ওপর বক্তৃতা| সাথে প্রায় সন্ধ্যায় থাকতো বিভিন্ন Public Outreach বা জনসচেতন কার্যক্রম যেখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রের সাথে জড়িত প্রখ্যাত মানুষরা এসে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতেন তাঁদের কাজ কর্মের কথা সরল ভাষায়| তেমনই এক সন্ধ্যায় অধ্যাপক Schmidt-এর কথা থেকে জানতে পারলাম যে তিনি নাকি জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণাই করতে চাননি একটা সময় ! এসবের মাঝেই ১২ই অগাস্ট আয়োজন করা হয়েছিল Gala dinner| প্রায় ২,৫০০ জ্যোতির্বিজ্ঞানী একসাথে বসে রাতের খাবার খাচ্ছেন, একে অন্যের সাথে নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, সে এক অসাধারণ দৃশ্য| শেষে দেখা গেলো আরও এক অভূতপূর্ব দৃশ্য| বিশ্বের নানান দেশের বিজ্ঞানীরা একসাথে নাচেও অংশ নিলেন! তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৭২ বছর বয়সী জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডেব্রা এলমগ্রিন, যিনি ২০২১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত IAU-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি IAU-এর ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে এই পদে অধিষ্ঠিত হন। ডেব্রা এলমগ্রিন একজন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, যিনি ছায়াপথের গঠন এবং বিকাশ সম্পর্কিত গবেষণার জন্য পরিচিত।


নোবেলজয়ী অধ্যাপক Brian Schmidt এর সাথে লেখক|
সব মিলিয়ে এবারের কনফারেন্স ছিল ভিন্ন স্বাদের| ১৫ই অগাস্ট, IAU-GA এর শেষ দিন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয় যে, পরবর্তী আসর বসবে গ্যালেলিও গ্যালিলির দেশ ইতালিতে ২০২৭ সালের অগাস্ট মাসে |


কেপটাউন ICC কনভেনশন সেন্টারে তোলা লেখকের ছবি |
** লেখক বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার University of Witwatersrand বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে কর্মরত |


আরও পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন