

মৈত্রেয়ী চৌধুরীঃ ”যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা/নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’’। মাতৃ রূপে দেবীর আগমনের বার্তা দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে শরৎ কালে নীলাকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘগুলো মুক্ত বিহঙ্গের মত আকাশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়ায়। আবার শরৎ মানে তো বৃষ্টি, প্লাবন তাই বর্ষার জলসিক্ত প্রকৃতি সবুজ সতেজতার সাজে সজ্জিত হয়ে দেবীর প্রতিক্ষায় ব্রতী হয়। পাখির ঝাঁক, পাল তোলা নৌকা , পুকুর আর বিলের জলে শাপলা, পদ্ম, ধানের শীষে হালকা শিশির তাতে রামধেনু রঙের প্রতিফলন, গাঢ় নীল আকাশে সোনাঝরা রোদ, ভোরের শিউলি ফুল সব কিছুই মা দুর্গার আগমনের পূর্ব থেকে দীর্ঘ দাবদাহের পর নবরূপে সজ্জিত হয়। প্রকৃতির এই সাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মৃৎশিল্পী থেকে বস্ত্র বিপণী ও নানা ধরনের ছোট থেকে বড় শপিং মল গুলি ও বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন। সর্বত্র সাজসাজ রব। মা আসছেন তাঁর পুত্র কন্যা সহ, মা কে স্বাগত জানাতে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে নব জোয়ারের প্রচেষ্টা শুরু হয়। শরতের শুরুতেই বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয় ঘর পরিষ্কারের রেওয়াজ। সম্পূর্ণ বাড়িকে পরিস্কার করা, রঙ করা ও পরিপাটি রূপ দিয়ে নূতনত্বের ছোঁয়া।
এরপর প্রতিক্ষিত মহালয়ার পুণ্যতিথি উপস্থিত হয়।ভোর বেলা বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে উচ্চারিত চন্ডী পাঠের পূর্বে শঙ্খ ধ্বনির সাথে সাথে আশ্বিনের শারদ প্রাতে………এরপর ই চন্ডীপাঠ জনমানসের অন্তরে শিহরণ জাগরিত করে।ছোট থেকে বড় সকলে সেই কন্ঠধ্বনিতে ঘুম থেকে উঠে মহালয়া মুগ্ধ ভাবে শোনে। আবেগঘন পরিবেশ সকলের মনে এক শুভ চেতনার জাগরিত হয়, আর চন্ডীপাঠে বর্ণিত শুভ শক্তির সাথে অশুভ শক্তির লড়াইয়ের মতো মনেও শুরু হয় দোলাচল। কারণ আমাদের মন সংসারের কামনা বাসনায় বদ্ধ হয়ে গেছে।মন কখনো কখনো বাসনার সুতো কেটে বের হয়ে আসতে চায় আর সে জন্যই শুভ অশুভ দ্বন্ধ।


মাতৃ রূপে দেবীর আগমন বার্তা দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে মহালয়ায় চন্ডীপাঠে দেবীসূক্ত পাঠ হয়। এই সূক্তের রচয়িতা মহর্ষি অম্ভৃণের মেয়ে বিদূষী বাক্।কথিত আছে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে আত্মীয় স্বজনদের দেখে অর্জুন যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আত্মীয়দের হারিয়ে তাদের রক্তের বিনিময়ে সিংহাসন দখল করলে লাভ কি? অর্জুনের এই বিষাদ দিয়েই সূচনা গীতা কথামৃতের।
প্রসঙ্গত সুরথ রাজাকেও তাঁর ই মন্ত্রীরা রাজচ্যুত করে তাড়িয়ে দেন।রাজা একটু শান্তির আশায় বনমধ্যে ঘুরতে ঘুরতে চলে আসেন মেধস মুনির আশ্রমে।মুনির সাথে জগৎ সংসারের দুঃখনাশ নিয়ে নানা কথাবার্তা শুরু হয়, আর এইভাবেই চন্ডীর আরম্ভ।দুঃখ, নিরাশ, হতাশা এইসবের মধ্যে মায়ের এই আগমন যেন মেঘের আড়াল থেকে একফালি সূর্যালোকের ঝলক। এইভাবেই মায়ের আগমণী গানের সুর আজ থেকে আপামর সকল বঙ্গ হৃদয়ে আনন্দের হিল্লোল….
আরও পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন