গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো
১৯৮৬ সালের পর বহু প্রতীক্ষিত রাষ্ট্রীয় শিক্ষানীতি ২০২০ ঘোষণা করা হয়। দেশব্যাপী বহু-স্তরীয় আলোচনা ও পরামর্শ ছাড়া এই নীতি গৃহীত হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু সরকারের যুক্তি ছিল বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী বহু-স্তরীয় আলোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এটি একটি পূর্ণ শিক্ষানীতি যা জনসাধারণের আশা-আকাঙ্খা ও প্রত্যাশায় পূরণে সক্ষম হবে।
১৯৫০ সাল থেকে আমরা শিক্ষাকে সংবিধানের ‘নীতি নির্দেশক সিদ্ধান্তে’র মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে একের পর এক নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে এসেছি। সেই সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল আগামী দশ বছরের মধ্যে সমস্ত শিশুকে শিক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। আজ ৭০ বছর অতিক্রান্ত । সেদিনের সেই প্রতিশ্রুতি আজ রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির পর্যায়ে চলে গেছে। অবস্থার কিছু পরিবর্তন হয়নি তা নয় তবে তা খুব সামান্য। এখন ‘নতুন শিক্ষানীতি ২০২০’তে বলা হচ্ছে , দশ বছরের মধ্যে স্কুলের বাইরে থাকা দুই কোটি শিশুদের আবার স্কুলমুখী করা হবে । তবে এই লক্ষ্যমাত্রা কতটা অর্জনকরা সম্ভব তা সময়ই বলবে।
এই নূতন শিক্ষানীতিতে কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে জনসাধারণকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে নিয়ে যেতে হবে। ‘স্কিল ইন্ডিয়া’র নামে জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। তবে আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে মৌলিক শিক্ষাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। গান্ধীজির স্বপ্ন ছিল একটি স্বনির্ভর সমাজ গঠনের, যেখানে শিক্ষাকে কর্মসংস্থানমুখী, জীবন ও সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কিত এবং গ্রামমুখী করার কথা বলেছিলেন। এমনকি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরও শিক্ষাকে বহন না করে বাহন করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এই নতুন শিক্ষানীতির লক্ষ্য গ্রামীণ ভারত নয় বরং বাজার ভিত্তিক শিক্ষা।
বর্তমানে ‘মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের’ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে ‘ড্রপ-আউট রেট’ (স্কুল ড্রপআউট রেট) হল ৪০%, স্কুলমুখী এই শিশুদের মাত্র ৫০ % ৮ ম শ্রেণী পর্যন্ত পৌঁছায় এবং তাদের মধ্যে ১৭ % মেয়ে। এই শিশুরা পড়াশুনা ছেড়ে কোথায় চলে যায় এবং কেন চলে যায় তা কারও কাছে গোপন নয়। এই পরিসংখ্যান দলিত, উপজাতি, সংখ্যালঘু, গ্রামীণ মেয়ে এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ভাগ্য দেখানোর জন্য যথেষ্ট। এখন অষ্টম (১৪ বছর বয়স) শ্রেণী থেকে দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে। এত কম বয়সে পেশা ভিত্তিক শিক্ষার দেওয়ার কী খুব প্রয়োজন আছে? আবার কি আমরা বর্ণভিত্তিক সমাজে পরিণত হতে চলেছি? সন্তানদের কি তাদের পৈতৃক পেশায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ? তাদের কি তৈরি করা হবে কর্পোরেট জগতের খুচরা যন্ত্রাংশ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য মানব সম্পদ হিসাবে রেখে দেওয়া হবে? যার জন্য এমন উচ্চাভিলাষী নীতি প্রণীত হয়েছে তারই নাম কি শিক্ষা? নাকি জ্ঞানের ‘সুপার পাওয়ার’-এর আড়ালে সস্তাশ্রমের বাজার বসানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন