

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাম তেলকে ঘিরে বিতর্ক তীব্র হয়েছে।আমরা প্রতিদিন প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে পাম তেল খাচ্ছি। আমাদের মধ্যে যারা একটু বেশী স্বাস্থ্য সচেতন তারা হয়ত সরাসরি রান্নাতে পাম তেল ব্যবহার করছেনা,পরিবর্তে জলপাই তেল (অলিভ অয়েল) এবং ক্যানোলা তেল ব্যবহার করছে। আবার একটা বড় অংশের লোক না জেনে হউক বা কম দামের জন্য হউক পাম তেল ব্যবহার করছে। প্রত্যক্ষ ভাবে যারা এটি খাচ্ছে না তাদের অধিকাংশ এই তেল খাচ্ছে কিন্তু পরোক্ষ ভাবে বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের মাধ্যমে। আজ আমরা পাম তেলের সম্ভাব্য ত্রুটিগুলি নিয়ে আলোচনা করব এবং কেন বিকল্প হিসাবে জলপাই তেল বেছে নেওয়া স্বাস্থ্যকর বিকল্প সে সম্পর্কে আলোকপাত করব। এই বিষয়ে আমরা একজন ডায়েটিশিয়ান এম চৌধুরীর সাথে কথা বলেছি।
পাম তেল পাম গাছের ফল থেকে প্রাপ্ত। এটি বিভিন্ন খাদ্য পণ্য, প্রসাধনী, এমনকি জৈব জ্বালানীতে ব্যবহৃত হয়। উচ্চ উৎপাদনশীলতা এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি জনপ্রিয়। স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে পাম তেলে প্রায় ৫০% স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ৫০% “ভাল” ফ্যাট যেমন মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা “খারাপ” এলডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়াতে পারে। বেশী মাত্রায় এলডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকির কারণ। সেইসাথে এটি স্থূলতা এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির মত স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে যুক্ত। বর্তমানে পাম তেল আমাদের খাদ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের একমাত্র উৎস নয়, এটিকে ব্যাপক ভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার করা হয়, যা আমাদের সামগ্রিক স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
অন্যদিকে, জলপাই তেল, বিশেষ করে অতিরিক্ত ভার্জিন অলিভ অয়েল, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়। গবেষণায় ধারাবাহিকভাবে দেখানো হয়েছে যে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে, প্রদাহ কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। পাম তেলের চেয়ে জলপাই তেল বেঁছে নেওয়া সেই সমস্ত মানুষদের জন্য উপযোগী হতে পারে যারা তাদের কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।
অলিভ অয়েলে উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি আমাদের কোষগুলিকে ফ্রি র্যাডিকেলের কারনে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে ।সেই সাথে এটি উন্নত কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য,ভাল জয়েন্ট এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বর্তমানে যদিও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে পাম তেল ব্যবহার করা হয়, তবু প্রতিদিনের ব্যাহারের জন্য অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো তেল বা ক্যানোলা তেলের মতো কোনও তেল বেছে নেওয়া একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে ।
বি.দ্রঃ-পেশাদার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজনের ভিত্তিতে পদ্ধতিকে ব্যক্তিগতকৃত করা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন