

প্রীতি গুপ্তাঃঅবশেষে মুক্তিপেল বছরের প্রথম বিগবাজেটের ছবি ফাইটার। দীপিকা-হৃত্বিকের জুটির প্রথম ছবি ফাইটার। প্রথম রিভিউতেই বাজিমাৎ করেছে ফাইটার। বলিউড সেলেব থেকে আমজনতা সকলেই মুগ্ধ দীপিকা-হৃত্বিকের কেমিস্ট্রিতে। তার সঙ্গে ভরপুর অ্যাকশন।নেটপাড়ায় হইচই পড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটিকে পয়সা উসুল ছবি বলে দাবি করেছেন দর্শকরা।একেবারে অ্যাকশন বিনোদনে ঠাসা। পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ-এর মর্মান্তিকভাবে পুলওয়ামা হামলা চালানোর মাত্র কয়েকদিন আগের ২০১৮-র প্রেক্ষাপটে ছবিটি তৈরি হয়। তবু কিছু প্রশ্ন থেকেই গেল।
সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে, বিমান কর্মকর্তাদের সেরা দল কম্যান্ডিং অফিসার রাকেশ জয়সিং ওরফে রকি (অনিল কপুর) এর নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে এয়ার ড্রাগন নামে একটি ইউনিট গঠন করে। এই দলে স্কোয়াড্রন লিডার মিনাল রাঠোর ওরফে মিন্নি (দীপিকা পাডুকোন) স্কোয়াড্রন লিডার শমসের পাঠানিয়া ওরফে প্যাটি (হৃত্বিক রোশন), স্কোয়াড্রন লিডার সরতাজ সিং ওরফে তাজ (করণ সিং গ্রোভার), স্কোয়াড্রন লিডার বশির খান ওরফে বাশ (আকস) রয়েছে।
ছবির প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ফাইটারে তেমন নতুন কিছু নেই, যা আগে কখনও দর্শক দেখেননি। হিন্দি সিনেমার তালিকায় আরও একটি চলচ্চিত্র, যা তৈরি হয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। বেশ কয়েকটি সংলাপ আপনাকে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করাতে পারে। তার কারণ মাঝেমধ্যেই মনে হতে পারে আরে এসব ডায়লগ তো আমার আগেও শোনা।
ছবির আরও একটি দুর্বল অংশ হল দ্বিতীয়ার্ধের গতি। যা ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছনোর আগেই খানিক লুট পুট গ্যায়া। যুদ্ধ দেখে খানিক ক্লান্তি লাগবে বৈকি। মনে হবে ভারতকে নিজের প্রমাণিত করার এটা নবম পুনরাবৃত্তি। আরও বেশকিছু দৃশ্য খানিক অবাক করবে। হৃত্বিক একজন সন্ত্রাসীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা। যুদ্ধে যাওয়ার মতো আরও কয়েকটি জিনিস। যাই হোক ফাইটার যদিও 3D তে মুক্তি পাবে। তবে মনে হয় না 3D-তে দেখার খুব প্রয়োজন আছে।
এতসব ত্রুটি সত্ত্বেও, ফাইটার বেশ চটকদার এবং স্মার্ট কাজ। বেশ ছক কষে তৈরি বলা যায়। পাকিস্তানের ফাইটার জেটের মধ্যে লড়াই। প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার কৌশল, বিভিন্ন স্টান্ট, যুদ্ধের দৃশ্য অনেক বেশি উত্তেজনায় ভরিয়ে তোলে।ফাইটার প্রযুক্তিগত দিক থেকেও বেশ আকর্ষনীয়। সচিথ পাওলোসের সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো। সিদ্ধার্থ আনন্দের পরিচালনায় হৃত্বিক এবং দীপিকার মধ্যে রসায়ন দেখার সুযোগ হয়েছে দর্শকের। শত্রুর বুলেটের মুখোমুখি হওয়া বা কিছু আবেগঘন দৃশ্যে সবেতেই তাঁদেরকে সাম্প্রতিক সময়ের সেরা অন-স্ক্রিন জুটি বলে মনে করা হচ্ছে তাঁদের। দীপিকাকে ছবিতে ভীষণই গর্জিয়াস দেখিয়েছে। যা দর্শকের নজর কেড়েছে বলা চলে। পাঠান এবং ফাইটারের পরে, এখনই সময় এসেছে অভিনেত্রীকে অ্যাকশন চরিত্রে যোগ্য জায়গা দেওয়ার।
চমৎকার বিনোদনকারী ভাবলে খানিক ভুল ভাবা হবে। তবে ফাইটার— অ্যাকশন, নাটক, গান, রোম্যান্স এবং এমনকী আবেগেরও মিশেল। তবে ছুটি মরসুমে হৃত্বিক ভক্তেরা একবার দেখে আসতেই পারেন।বলিউডে এই প্রথম হৃত্বিক রোশন এবং দীপিকা পাড়ুকোনকে নিয়ে ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ। এই পরিচালকের সঙ্গে একাধিক ছবি করেছেন দুই অভিনেতা তবে সেটা আলাদা আলাদা। একসঙ্গে কখনও কোনও ছবিতে কাজ করেননি তাঁরা। ভারতীয় বায়ুসেনাকে নিয়ে ছবিটি তৈরি করেছেন। যেখানে পাকিস্তানে জঙ্গি দমনে বায়ুসেনার দক্ষতা তুলে ধরা হয়েছে। কীভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা দেশকে রক্ষা করেন সেই প্রেক্ষাপটেই ছবিটি তৈরি হয়েছে।
২০২৪-র প্রথম বিগ বাজেটের ছবি ফাইটার। ২৬ জানুয়ারির উইকেন্ডকে সামনে রেখে একেবারে যতার্থ টপিকেই মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। সেকারণে প্রথম থেকেই অ্যাডভান্স বুকিংয়ে জোয়ার এসেছিল। মুক্তির আগে ১ কোটি টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। যদিও গতবারে বক্স অফিসের রেকর্ড ব্রেক করে ফেলেছে একাধিক ছবি। বিশেষ করে শাহরুখ খানের সিনেমা। সেকারণে গতবছরকে শাহরুখ খানের বছর বলা হচ্ছে। একসঙ্গে তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। এবং তিনটি ছবিই বক্স অফিসে বিপুল ব্যবসা করেছে। শাহরুখ খানের জওয়ানকে গত বছরের সবচেয়ে লাভজনক ছবি বলা হচ্ছে।
এই বছরে প্রথম বলিউডের মেগা বাজেটের ছবি মুক্তি পেল। গতবার সিদ্ধার্থ আনন্দের পাঠান বক্স অফিসের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল। ফাইটার ছবি সেটা পারে কিনা সেটাই দেখার। তবে ছবিটি দেখার জন্য গতকাল রাতে বলিউড তারকারা উপস্থিত হয়েছিলেন। তাতে ছিলেন হৃত্বিকের প্রাক্তন স্ত্রী সুজান খান। তিনি তাঁর বান্ধবীদের নিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন সিনেমাটি। হৃত্বিকের অ্যাকশনে মুগ্ধ তিনি। অন্যদিকে হৃত্বিকের বাবা রাকেশ রোশনও গিয়েছিলেন সেটি দেখতে। তিনিও ছেলের অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন।
এতো গেল পরিবারের কথা কিন্তু আসল যাঁদের জন্য সিনেমা সেই জনতা কী বলছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই হই হই শুরু হয়ে গিয়েছে ছবিটি নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলেই দাবি করেছেন একেবারে পয়সা উসুল সিনেমা ফাইটার। টিকিট কেটে সিনেমা দেখতে গিয়ে আফশোস হবে না। অ্যাকশনে ফরপুর তার উপরে দীপিকা-হৃত্বিককে অসাধারণ মানিয়েছে ছবিটি। প্রথম দিনেই বক্স অফিসে ২৫ কোটি টাকা কালেক্ট করে ফেলেছে ফাইটার।
যদিও মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে নিষিদ্ধ হয়েছে ফাইটার। তবে দুবাইয়ে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। একসঙ্গে আমেরিকা এবং ব্রিটেনেও মুক্তি পাবে ছবিটি। মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে মুক্তি না পাওয়ার কারণে গ্লোবাল বক্স অফিস কালেকশনে একটু হলেও ধাক্কা খাবে ছবিটি। সাত সকালেই সিনেমা হলে প্রথম শো দেখতে পৌঁছে গিয়েছিলেন দর্শকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম শো দেখার হুল্লোরের ভিডিও শেয়ার করেছেন অনেকে। তাতে দেখা গিয়েছে ছবির গানের সঙ্গে দর্শকরাও নাচতে শুরু করেছেন সিনেমা হলে।
আরও পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন