বাংলাদেশের হাইকোর্ট তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সব স্কুল বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন

বিশ্বের অনেক দেশের সাথে বাংলাদেশও বর্তমানে প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে লড়াই করছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া বর্তমানে খুব গরম। তাপপ্রবাহে মানুষের অবস্থা খারাপ। প্রচণ্ড গরমের কারণে ঘর থেকে বের হতে সমস্যা হচ্ছে। এদিকে আজ বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট। বাংলাদেশের হাইকোর্ট তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সব স্কুল বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সিদ্ধান্তে মাদ্রাসাগুলোও বন্ধ থাকবে।

একটি উত্তপ্ত তাপপ্রবাহ বাংলাদেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছে, আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলছে শীঘ্রই কোনো স্বস্তির সম্ভাবনা নেই। বেশ কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে চলছে – আর্দ্রতার কারণে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। সন্দেহভাজন হিট স্ট্রোকে একজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু জেলায় রাস্তার পিচ গলে যাচ্ছে, এবং ফসলের ক্ষতির খবরও পাওয়া যাচ্ছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।

শনিবার, যশোর – যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এবং ভারতের সীমান্তে – সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে, ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভারতের সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গায় একই দিনে সর্বোচ্চ ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। শনিবার ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের (বিএমডি) সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা গণমাধ্যমকে বলেন, কিছু অংশে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে, ৪৪ ডিগ্রি পর্যন্ত।আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, খুলনা বিভাগের সব জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে রয়েছে, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগও বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে সর্বকালীন রেকর্ড গরম কলকাতাতেও। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার সমস্ত স্কুলের ছুটি ঘোষণা করেছে।ইতিমধ্যে দুপুরে শহরের তাপমাত্রা পৌঁছে গেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঘরের বাইরে পা রাখলেই রোদের আঁচে কার্যত গা-হাত-পা পুড়ে যাচ্ছে। বইছে লু। ঘরেও শান্তি নেই। গরম হাওয়ায় ঘরেও টেকা দায়।এপ্রিলজুড়েই দাবদাহ চলছে বঙ্গে। সোমবার দুপুরে শহরের তাপমাত্রা ছিল ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বাড়ল। ভাঙল গত সাত দশকের রেকর্ড।

আবহাওয়া দপ্তর বলছে এখনই তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি নেই।  শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে। সপ্তাহান্তে রবিবার স্বস্তি দিতে পারে ঝড়বৃষ্টি। প্রচণ্ড উষ্ণ পশ্চিমি হাওয়া অবাধে দাপট দেখাচ্ছে বাংলায়। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্পপূর্ণ হাওয়া ঢুকছে। কিন্তু তা বেশ দুর্বল। তবে এই সপ্তাহে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে।উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের রবিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শহরবাসী স্বস্তি পাবে কী না এই ব্যাপারে স্পষ্ট করেনি হাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের কথায়, দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। 

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top