রাহুলের ভারতজোড় সাফল্য পেলেও, অভিষেক কি পারবে ?

উত্তরাপথ

ছবি : অভিষেক ব্যানার্জীর টুইটার থেকে সংগৃহীত

রাহুল গান্ধীর ১৪৬ দিনের প্রায় ৩৮৫০ কিলোমিটার ভারতজোড় যাত্রার সাফল্য কংগ্রেস ঘরে তুলতেই তৃনমূলের নতুন উদ্যোগ জনসংযোগ যাত্রা।এই যাত্রায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৬০ দিনে ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ” জনসংযোগ ” করবেন। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রা রাজ্যের সবচেয়ে দক্ষিণ প্রান্ত দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাকদ্বীপে শেষ হবে। এই পুরো যাত্রায় অভিষেক মোট ২৫০টি সমাবেশে ভাষণ দেবেন। এখন প্রশ্ন তৃণমূল তথা অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে। কংগ্রেস তথা রাহুল গান্ধীর ভারতজোড় যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরে পরাজিত একটি দলের কর্মীদের মনোবল ফেরানো এই সাথে দলকে একটি আন্দোলনের সাথে যুক্ত করে আবার প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা। কিন্তু অনুরূপ রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা তৃনমূলের নেই। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পর পর তিনবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া দলটির তার কর্মীদের মনোবল আর নতুন করে জাগানোর দরকার নেই তাহলে কি এমন হল যে অভিষেক এই তপ্ত গরমে টানা ৬০ দিন ধরে পদযাত্রা করে চলেছে ?

এখানে প্রয়োজনটা হল ইমেজ ক্লিনআপের। তৃণমূল দলটির বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের মতো একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে যা দলটির প্রতি পশ্চিমবঙ্গের এক বড় অংশের মনে বিপরীত মনোভাবের জন্ম দিয়েছে তার জন্য আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনমত চাওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) দলটিকে শুদ্ধ করার চেষ্টা করছে এই বার্তা রাজ্যব্যাপী পৌঁছে দিতে চাইছে।

তাই জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোর কয়েকদিন পরে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন টিএমসি ঘোষণা করেন তারা আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করার জন্য একটি গোপন ব্যালটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করবে।  মহড়ার নেতৃত্ব দেবেন দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। এতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসে টিকিট বণ্টনের উপর অভিষেক ব্যানার্জির দখল শক্ত হবে বলে মনে করছেন রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেই সাথে এটিকে দলের হারানো জায়গা  ফেরৎ পাওয়ার চেষ্টা হিসাবেও দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে। যদিও বিরোধী দলগুলি অভিষেকের এই যাত্রাকে কটাক্ষ করে বলেছেন এই যাত্রা তৃণমূলের দুর্নীতির ট্যাগ ঝরিয়ে ফেলতে পারবে না।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


কৃষ্ণগহ্বরের "ছায়া" ও "ছবি"

ড. সায়ন বসু: ১৭৮৩ সালে ভূতত্ত্ববিদ জন মিচেল (John Michell) ‘ডার্ক স্টার’ (dark stars) শিরোনামে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তার গবেষণা পত্রের বিষয়বস্তু ছিল "বিপুল পরিমাণ ভর বিশিষ্ট কোন বস্তু যার মহাকর্ষের প্রভাবে আলোক তরঙ্গ পর্যন্ত পালাতে পারে না"। এখান থেকেই মূলত কৃষ্ণগহ্বরের (Black Hole) ধারণা আসে এবং এটি নিয়ে গবেষনা ও অনুসন্ধান শুরু হয়। পরবর্তিতে অবশ্য এটি বিজ্ঞান মহলে একটি অযৌক্তিক তত্ত্ব হিসেবে বেশ অবহেলার স্বীকার হয়। আলোর মত কোন কিছু বেরিয়ে আসতে পারবে না এমন একটি তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ অযৌক্তিক মনে হয়েছিল। তাই ধীরে ধীরে থেমে যায় কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষনা। .....বিস্তারিত পড়ুন

মণিপুরের সামগ্রিক উন্নয়ন বর্তমান সমস্যার সমাধান হতে পারে

উত্তরাপথ: মণিপুরের মেইতি সম্প্রদায় তফসিলি উপজাতির তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্তির দাবি অব্যাহত রাখবে এবংআন্দোলন তীব্রতর করবে বলে খবর। অন্যদিকে ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ, কিছু পাহাড়ি উপজাতির একটি তড়িঘড়ি তৈরি করা ছাতা সংগঠন,তারা মেইতি সম্প্রদায়ের দাবির বিরোধিতা করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই পরিস্থিতি আরও অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।অন্যদিকে আরেকটি সূত্র বলছে মণিপুরের পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। যদিও এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে রাজ্য সরকার।  কিন্তু এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে দীর্ঘ .....বিস্তারিত পড়ুন

যুক্তিবাদী আন্দোলনের পথিকৃৎ প্রবীর ঘোষও আমি

ড. জীবনকুমার সরকার: ৭ এপ্রিল ২০২৩ প্রয়াত হলেন যুক্তিবাদী আন্দোলনের পথিকৃৎ প্রবীর ঘোষ। তাঁর প্রয়াণে দেশ ভারাক্রান্ত। যুক্তিবাদীরা চরম মর্মাহত। আমিও। তাঁর সঙ্গে কীভাবে জড়িয়েছিলাম সে এক ইতিহাস। ১৯৯৪ সালে মাধ্যমিক পাস করে গাজোল হাইস্কুলে সবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি। নতুন বইয়ের মধ্যে ডুবে আছি। আর নিয়মিত ক্লাস করছি। এইভাবে পুজোর ছুটি এসে যায়। পুজোর ছুটির আগের দিন অর্থাৎ যেদিন স্কুল হয়ে এক মাসের জন্য বন্ধ থাকবে স্কুল, সেইদিন আমি আর রাজেন লাইব্রেরীতে যাই। রাজেন আমার ছাত্রজীবনের সেরা বন্ধু। দুজনে কী বই নেবো, কী ধরনের বই নিয়ে .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top