কয়েক দশক ধরে গেট স্টপার হিসাবে ব্যবহৃত পাথর ১.১ মিলিয়নেরও বেশি মূল্যে বিক্রি হয়

উত্তরাপথঃকথিত আছে যে হীরার আসল মূল্য কেবল একজন জহুরিই জানতে পারে।   রোমানিয়ার এই ঘটনা এই কথাটিকে আবার একবার সত্য বলে প্রমাণ করল।এখানে একজন বয়স্ক মহিলা কয়েক দশক ধরে একটি মূল্যবান অ্যাম্বারের টুকরোর আসল মূল্য না জেনেই বছরের পর বছর ধরে এটিকে দরজার গেট স্টপার হিসাবে বছরের পর বছর ধরে ব্যবহার করা হয়েছে।প্রসঙ্গত অ্যাম্বার হল একটি জীবাশ্ম গাছের রজন যা গাছের বাকল থেকে নির্গত হয়। সময়ের সাথে সাথে, রজন শক্ত হয়ে যায় ,তবে এক একটা রজন থেকে অ্যাম্বার তৈরি হতে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে। সময়ের সাথে সাথে, অত্যন্ত সান্দ্র পদার্থটি একটি শক্ত, উষ্ণ আভাযুক্ত উপাদানে পরিণত হয় যা রত্ন পাথর হিসাবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।

স্প্যানিশ সংবাদপত্র ‘এল পাইস’ অনুসারে, রোমানিয়ায় প্রাপ্ত এই মূল্যবান রত্নটির মূল্য আসলে ১.১ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায়.৯ কোটি ১৩ লাখ। বৃদ্ধ মহিলাটি কয়েক বছর আগে রোমানিয়ায়, কোলটি গ্রামের কাছে বুজাউ নদীর তীরে বেলেপাথরের টুকরোর সাথে এই আম্বরের টুকরোটি পড়ে ছিল । মহিলা নদীর পাড় থেকে এই আম্বরের টুকরোটি তুলে নিয়েছিল তার কোলটি গ্রামের বাড়িতে। এই পাথরটির আসল মূল্য সম্পর্কে তার ধারণা ছিল না,তাই সেএটিকে নিজের ঘরের দোরগোড়ায় রেখেছিলেন । এমনকি একসময় চোর তার বাড়িতে চুরি করতে আসে। সেইসময় তারাও এই রত্নটির মূল্য চিনতে পারেনি। তারা কিছু স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে চলে যায়।

এই মহামূল্যবান রত্নটি লক্ষাধিক বছরের পুরনো। এই অ্যাম্বারের আসল মূল্য ১৯৯১ সালে মহিলার মৃত্যুর পরে সামনে আসে । মহিলার এক আত্মীয়ের পাথরটি দেখে সন্দেহ হয় যে এটি মূল্যবান হতে পারে।এরপর সে রোমানিয়া সরকারের সাথে যোগাযোগ করে। তাঁর সন্দেহ সত্য প্রমানিত হয়। রোমানিয়া সরকার উচ্চ মূল্যে পাথরটি কিনে নেয়।সরকার এটিকে একটি জাতীয় ধন হিসাবে ঘোষণা করে এবং এর সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য এটিকে পোল্যান্ডের ক্রাকোর ইতিহাস জাদুঘরে প্রেরণ করে।

 পোল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন যে অ্যাম্বারের এই টুকরোটি ৩৮.৫ থেকে ৭০ মিলিয়ন বছর পুরানো। বুজাউ-এর প্রাদেশিক যাদুঘরের পরিচালক ড্যানিয়েল কস্তাচের মতে, অ্যাম্বারের এই টুকরোটি বৈজ্ঞানিক এবং যাদুঘর উভয় পর্যায়েই অত্যন্ত মূল্যবান।তারা বিশ্বাস করে যে এটি বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাম্বার টুকরাগুলির মধ্যে একটি।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top