জীবনকুমার সরকার


হঠাৎ একদিন বিপ্লবকে মোবাইলে কল করে বিমল জানায়, দাদা, একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবো তোমাকে।
বিপ্লব বলে, হ্যাঁ বলো। যত ইচ্ছে বলো। অসুবিধা কোথায়?
বিমল অল্প কিছুদিন মেলামেশা করতে করতে জানতে পেরেছে বিপ্লবের মানসিকতা কেমন। বিপ্লব শিক্ষা ও সৌজন্যতায় অমায়িক গোছের ছেলে। গোটা পাড়া সে কথা জানে। আর বিমল তো খুব কাছ থেকে মিশে মিশেই জানে। তবু ওর মনে একটা ভয় ও সংকোচ কাজ করছিলো অনেকদিন থেকে। সংকোচের প্রাবল্যে ও কথাটা কোনোদিনই বলতে সাহস পায়নি। তাই সে আজ বলবে মনে করেই কল করেছে।
মানুষকে সুসম্পর্কে টিকিয়ে রাখতে কত ধরনের সাবধনতা অবলম্বন করে যে চলতে হয়, তার হিসেব নেই। এ জগৎ সংসারে সম্পর্কের ভাঙা-গড়ার শেষ নেই। এই ভাঙছে। এই গড়ছে। এই করতে করতে প্রত্যেকের মানবজীবন সাঙ্গ হয়। রয়ে যায় কেবল স্মৃতিটুকু। এ খেলার অন্তর্ভুক্ত আমরা সবাই।
যা হোক , অবশেষে বিমল কথাটা বলেই ফেলে, তোমার একজন খুব কাছের আত্নীয় বেলাইন হয়ে গেছে। আজ দু’বছর হলো।
বেলাইন হয়ে গেছে বলতে? ——-বিপ্লব প্রশ্ন করে।
খানিকটা গলার স্বর নরম করে বিমল বলে, তোমার শালী দীপিকা অন্য একটি ছেলের পাল্লায় পড়েছে।
বলো কী? বিমলের এসব কথা শুনে বিপ্লব অবাক হয়। অবাক হলেও সে ভালো করেই জানে এসব আজকাল মামুলি বিষয়।
তারপর একসময় বিপ্লব ধীরে ধীরে সব ইতিহাস জেনে নেয়। বিমলও দু’বছর ধরে যা যা গচ্ছিত রেখেছে, তার সব বলে দেয়।
বিপ্লবের ঘুম চলে যায়। কে সে ভাগ্যবান? এমন রূপসী শালীর সঙ্গে মেলামেশা করে । বিয়ের পর থেকে বিপ্লব কোনোদিনই তার শালীর ব্যবহারের জন্য ভালো লাগতো না। তবু তার রূপে মুগ্ধ না হয়ে পারতো না। কিন্তু আর কী করা যাবে। গুণ না থাক, রূপ তো আছে। যৌবন তো আছে। শালীর রূপে বিপ্লব প্রথম থেকেই মুগ্ধ। বিপ্লব বহুবার দীপিকার সঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে লক্ষ করেছে, পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে যে কোনো পুরুষই দু’বারের বেশি ঘুরে তাকায়। শাড়ি পরে বেরোলে তো কোনো কথাই নেই।
বিমলের কথা শুনে বিপ্লব বহুবার কৃষ্ণপল্লি গিয়ে ঘোরাঘুরি করে দেখার চেষ্টা করেছে, কোন লোকটির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে তার শালী। বিমলের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। নজরে ধরা পড়েনি। তারপর শোনা যায়, বিপ্লবের শালী দীপিকা তারই কলেজের একজন ডি-গ্রুপের কর্মীর সঙ্গে চুটিয়ে লাইন মারছে। ছেলেটির বাড়ি মঙ্গলবাড়ি । বয়স বেশি নয়। বরং, লতিকার চেয়ে অনেক ছোটো। এই কচি ছেলেটিকে পেয়ে নাকি দীপিকা কলেজে ক্যাজুয়াল পোস্টে ঢোকার পর থেকেই পাকড়াও করে নেয়। তখন কৃষ্ণপল্লির ওটাকে বাতিল করে দেয়। কী আশ্চর্য! তাহলে এটা প্রেম কোথায়? এ তো একধরনের খেলা। শরীরের খেলা, যে খেলায় হৃদয় নেই। আছে যৌনতা আর বিনোদন।
মালঞ্চপল্লি থেকে মঙ্গলবাড়ি একটু দূরে বলে বিপ্লব আর খোঁজখবর রাখার তেমন চেষ্টা করে না। কিন্তু তার কৌতূহল তো সহজে যাচ্ছে না। সে তার শালী দীপিকার ফ্ল্যাটের আশেপাশে সময় পেলেই ঘোরাঘুরি করে। একদিন লতিকা তার ফ্ল্যাট থেকে একটি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বেরোয় রাস্তায়। বিপ্লব দেখতে পেয়ে,পরে জেনে নেয় ছেলেটির বাড়ি মঙ্গলবাড়ি।
মঙ্গলবাড়ির এই ছেলেটি অবিবাহিত। যতবারই বিপ্লব দীপিকার সঙ্গে ছেলেটিকে দেখতে পেয়েছে, ততবারই তার মুখে সবসময় হাসি দেখতে পেয়েছে। এ হাসি সাধারণ হাসি নয়। দেখেই বোঝা যায়, যেন বিশ্বজয়ের হাসি। খুব স্বাভাবিক। এই বয়সে শরীরের স্বাদ পেলে এই অনুভূতি স্বাভাবিক। তারপর ছেলেটি লাগালে পেয়েছে দীপিকার মতো একটি শরীরের খেলায় পাকাপোক্ত রমণীকে। বাংলা সিরিয়ালে দেখা কচি কাকীমা গোছের লতিকার শরীরটাকে কি আর ছেড়ে কথা বললে মঙ্গলবাড়ির ছেলেটি। ফলে দেদার টানাটানি করে দীপিকাকে নিয়ে। কখনও তার বাড়িতে । কখনও দীপিকার নির্জন ফ্ল্যাটে । কখনও হোটেলে। কলেজ ছুটি থাকলে চার চাকায় শহরের বাইরে দু’জনে নিরুদ্দেশ।
একদিন বিপ্লব হঠাৎ শুনতে পায়, এই ছেলেটির নাকি এবার বিয়ে। বিয়ের কার্ড দিতে আসবে মঙ্গলবাড়ি থেকে ।
ওগো তুমি বাড়ি থেকো সন্ধ্যায়——— এ কথা বলে বিপ্লবের বউ দেবলীনা। বিপ্লব বুঝে যায়, তাহলে দেবলীনা জানে না তার দিদির এই খেলা। জানবার মতো বুদ্ধিসুদ্ধি দেবলীনার কোনোদিনই নেই। তাছাড়া দিদিকে দেবলীনা অগাধ বিশ্বাস করে। অন্ধভাবে ভালোবাসে। দীপিকাও যে কোনো বিষয়ে বোনকে অতি সহজে পটাতে পারে। দিদি অন্যায় করলেও তার মুখের সামনে বলবার মতো সাহস দেবলীনার নেই।
সন্ধ্যায় মঙ্গলবাড়ির ছেলেটি কার্ড দিতে আসে। বিপ্লব অবাক হয়ে দেখতে থাকে ছেলেটিকে। সামনাসামনি এই প্রথম পরিচয়। চা-বিস্কুট আর মিষ্টি খাইয়ে দেবলীনারা আপ্যায়ন সারে। বিপ্লব মনে মনে ভাবে যেতেই হবে বিয়েতে। দীপিকা এই বিয়েতে ঠিক কী করে দেখতে হবে তা। বৌভাতের দিন বিপ্লব বউ আর মেয়েকে নিয়ে সকাল সকাল হাজির। চুপচাপ সবকিছু পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। আর অপেক্ষা করতে থাকে দীপিকার জন্য। দীপিকা কখন আসবে, আর তাদের চারচোখে কী কথা হয়, সে-সব বিপ্লব দেখবে। কিন্তু রাত দশটা বেজে যাবার পরও দীপিকা এলো না দেখে বিপ্লব বউ আর মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে যায়।
এই ঘটনার কিছুদিন পর বিপ্লব জানতে পারে, দীপিকা ছেলেটির এই বিয়ে মন থেকে একেবারে মেনে নিতে পারেনি। কান্নায় বার বার ভেঙে পড়েছে সে। নিজের স্বামীর কোনো আঘাতেও এমন করে কান্না করেনি লতিকা। করবে না? এত সুখ কে দেবে এরপর?
স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য, কবে থেকে থেকে দূরত্ব দুজনের মধ্যে। তাই দীপিকা মনে করে এই শরীর ফাঁকা ফেলে রেখে লাভ কী? শরীরের জন্য তো একটা মৌমাছি দরকার। অবশ্য স্বামী কাছে থাকতেই লতিকা একটু একটু করে এই খেলায় মাঠে নামে। এখন তো সে আরও দুরন্ত। দুরন্তপনায় মনের মতো একটি ছেলে ছিলো মঙ্গলবাড়ির এই ছেলেটি। সেও গেলো! কী দুঃখ লতিকার!
ঘরে একা একদম মন বসাতে পারে না দীপিকা। ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে বসে বসে প্রতিদন দেখে, আজকালকার ছেলেমেয়েরা রাস্তাঘাটে কীভাবে জড়াজড়ি করে যায় আসে। ঘরের ডাগর ডাগর বউয়েরা যে যার মতো মধ্যবয়সী পুরুষের সঙ্গে বাইকে চেপে হুঁশ করে কোথায় চলে যায়। আবার এসে নামিয়ে দেয় বাড়ির আশেপাশে। সে এসব দেখে সাহস পায়। ভয় পাবে কেন? শরীরের খেলায় ভয় পেলে চলে না, এটা দীপিকা বুঝে গেছে। তাছাড়া সে ভয় করবে কাকে? স্বামী তো প্রায় আট বছর আগেই ছেড়ে চলে গেছে বলা যায়। তিনি শহরেই একটি আলাদা বাড়িতে ভাড়া থাকেন। দেখা সাক্ষাৎ হয় না দু’জনের। একমাত্র মেয়ে, সেও বিয়ের পর থাকে বাঙ্গালোর। ফলে একা খাটে ঘুম আসে না দীপিকার। তার একটা পুরুষসঙ্গী চাই। ঘটনাটি দীপিকার পাড়ার কেউ কেউ জেনেও গেছে। কিন্তু আগের মতো মানুষ আর এসব নিয়ে নাকগলায় না। শহরে এই ধরনের পরকীয়ার খেলা এত বেড়েছে যে, মানুষ কতজনকে কী বলবে। তাছাড়া পরকীয়া এখন আইনস্বীকৃত। দীপিকার বান্ধবীরাও কেউ কেউ এই খেলায় তুমুল মত্ত। সেসবও লতিকার প্রেরণা।
দীপিকা আবার মাঠে নামে। এবারে পেয়ে গেছে প্রায় পঞ্চাষোর্ধ্ব একজন পুরুষ। পঞ্চান্ন ছুঁই ছুঁই। গায়ের রং কালো। একটু মোটাসোটা । চোখ দুটো শরীরের তুলনায় একটু ছোটো। কিন্তু শরীরী খেলায় উন্মত্ত পুরুষ। সবসময় জিন্স প্যান্ট আর টী-শার্ট পরে দীপিকার কাছে আসে। ঘুরতে গেলেও তাই। সেও থাকে কলোনীর একটি ফ্ল্যাটে। তার অবশ্য বউ আছে। ছেলেমেয়ে আছে কিনা জানে না বিপ্লব। কিন্তু বউয়ের সঙ্গে সঙ্গে কখনও কখনও বাইরে দেখতে পাওয়া যায়। বয়স যাই হোক, লতিকার দরকার একজন পুরুষ। যে পুরুষ তাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে, ঠাঁটবাট করার জিনিস কিনে দেবে। রাতে রাতে রেস্টুরেন্টের নিঝুম আলোয় বসিয়ে নানারকম খাবার খাওয়াবে। শহরে রেস্টুরেন্টের তো এখন অভাব নেই। মালদার মতো শহরে প্রেম করার জন্য রেস্টুরেন্টগুলোই নিরাপদ জায়গা। খাবার অর্ডার দিয়ে বসে বসে নানারকম গল্প সেরে নেওয়া যায়। কিংবা, যেদিন বাইরে ঘুরতে যেতে পারবে না, সেদিন খাবার ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেবে। ফাঁক বুঝে ফ্ল্যাটে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে যাবে। বিছানা লণ্ডভণ্ড করে যাবে। সুখ দিয়ে যাবে।
একদিন ঠিক রাত আটটায় বিপ্লব দেখতে পায়, দুটো এগরোল ক্যারিব্যাগে ঢুকিয়ে হাতে করে ঝুলিয়ে সেই মধ্যবয়সী লোকটি সন্তর্পণে দীপিকার ফ্ল্যাটের দিকে এগোচ্ছে। যখন হেঁটে যায় লোকটি, তখন দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তিনি এমন খেলায় মত্ত। মনে হয় লোকটির আগের অভিজ্ঞতা মাথায় আছে। হাঁটা চলার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। যখন দীপিকার ফ্ল্যাটের দিকে যায়, তখন একমনে হাঁটে। আর ফ্ল্যাটে ঢুকে যাবার পর মোটামুটি দু’ঘন্টা মতো কাটায়। বিবাহ বহির্ভূত প্রেমে যে কত মজা তা টের পায় দুজনে।
দীপিকার বয়স হয়েছে। যৌবন গেছে। চেহারার জেল্লাও গেছে। মনে মনে ভাবে এবারে মাঠ থেকে উঠে যাবে। কথায় কথায় আজকাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তবে কি মনে মনে নিজের স্বামী অপরেশকে খোঁজে সে? হয়তো তাই। আবার মাঠে নামবে লতিকা । এবারের মাঠে শরীর থাকবে না । সংসার চায় আবার সে। আশ্রয় চায়। শরীরের মধ্যে মুক্তি নেই, যৌবন চলে যাবার পর হাড়ে হাড়ে টের পেলো দীপিকা। জীবনস্রোতে কত ধরনের যে শ্যাওলা ফোঁটে,তার হিসেবে কে রাখে। দীপিকা এখন নীড়ে ফিরতে চায়। কিন্তু তার স্বামী অপরেশ কি আর মেনে নেবে এখন? তারও তো মন আছে। জেদ আছে। ইগো আছে। দীপিকার বেপরোয়া আচার আচরণে একদিন সে বাড়ি ছেড়েছিলো। তারপর তার তার কাছে এ খবরও আছে, দিনের পর দিন দীপিকা পুরুষ এনে ফ্ল্যাটে ফুর্তি করে।
অপরেশ নাকি বন্ধুদের কাছে বলেছে, চাকরি থেকে অবসর নেবার পর কোনো একটি আশ্রমে চলে যাবো, তবু দীপিকার কাছে যাবো না আর। অভিমানের মাথায় বাড়ি ছেড়েছিলাম, তাই বলে এত বড়ো সুযোগ নেবে দীপিকা ; সে স্বপ্নেও ভাবেনি। আর দীপিকার অভিভাবকরাও কেমন যেন। দীপিকা যা বোঝালো, তাই তারা মেনে নিলো। এভাবে হয় নাকি? বাস্তব যে কল্পনাকেও মাঝে মাঝে ছাপিয়ে যায়, তা আগে জানতো না অপরেশ। শেষমেষ নিজের জীবনে এমন হবে, ভাবেনি সে। নানা দুশ্চিন্তা আর অভিমান নিয়ে একা একা পড়ে থাকে একটা ভাড়াটে ঘরে। নিজেই রেঁধেবেড়ে খায়। অসুখবিসুখ হলে এক গ্লাস জল এগিয়ে দেবার কেউ নেই। অথচ, গৌড়রোডে তার পৈত্রিক বড়ো বাড়ি আছে। দাদা-বৌদি, ভাই-ভাইয়ের বউ, তাদের ছেলেমেয়ে, সব মিলিয়ে ভরা সংসার। সেখানে থাকলে অপরেশের এই একাকীত্ব জীবনের লড়াই থাকে না। তবু সে কোনোভাবেই সেখানে যেতে রাজি নয় সে। কিন্তু অপরেশ মনে মনে আজও সেই লতিকাকে খোঁজে, যার পিঠখোলা ব্লাউজ,সিল্কের শাড়ি, আর আলুথালু চুল। চোখেমুখে উথালপাতাল ঠাসা যৌবনের উন্মত্ততা। আর তাকে একা ঘরে যখন তখন জড়িয়ে ধরে লণ্ডভণ্ড করে দেওয়া জীবন।
বয়স হয়েছে বলে মনের জোর কমে এসেছে দীপিকার । মুখে ঝোপ ঝোপ দাগ। অসংখ্য ব্রণ।
প্রেমিক পুরুষের কাছে কদর কমছে। সব বোঝে দীপিকা।
কিন্তু এতদিনের অভ্যাস কী করে যাবে?
দীপিকা ভাবে, এ জীবনে পর পুরুষ নিয়ে খেলা অনেক হলো।
একদিন সন্ধ্যায় লতিকা পিঠখোলা ব্লাউজ,সিল্কের শাড়ি , চুল ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে অপরেশের ভাড়াবাড়ির দিকে। পেছনে পরে থাকে দীপিকার নিরিবিলি ফ্ল্যাট।
আরও পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন