টাইফুন ইউন-ইউং আজ জাপানের টোকাই অঞ্চলে প্রত্যাশিত ল্যান্ডফল ছবি সৌজন্যে – উত্তরাপথ
উত্তরাপথঃ টাইফুন ইউন-ইউং যা টাইফুন নং ১৩ নামেও পরিচিত যা আজ বিকেলের দিকে জাপানের টোকাই অঞ্চলে ল্যান্ডফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে নাগোয়া অবস্থিত। জাপান ইতিমধ্যে এর আগমনের জন্য নিজেদের আগাম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরে ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছিল টাইফুন ১৩। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার টোকাই এবং কান্টো অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করছে, যা পরিবহন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে।আবহাওয়া দপ্তরের মতে শুক্রবার সকাল ৬ টা নাগাদ ২৪ঘন্টা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ইজু দ্বীপপুঞ্জে ২৫০ মিলিমিটার, টোকাই অঞ্চলে ১৫০ মিলিমিটার এবং কান্টো-কোশিন অঞ্চলে ১০০ মিলিমিটার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) দেশের একটি বড় অংশের জন্য সতর্কতা ও পরামর্শ জারি করেছে, বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং সর্বশেষ তথ্যের সাথে আপডেট থাকার আহ্বান জানিয়েছে। টাইফুনটি প্রবল বৃষ্টি নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রতি ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি হতে পারে। এই ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস এবং নদীতে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা মানুষের জীবন ও সম্পত্তির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
জাপানের স্থানীয় প্রশাসন টাইফুনের প্রস্তুতিতে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে। বন্যা এবং ভূমিধসের প্রবণ এলাকাগুলির জন্য লোকজনকে সরানোর পরামর্শ জারি করা হয়েছে, এবং প্রয়োজনে তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ট্রেন এবং ফ্লাইট সহ পরিবহন পরিষেবাগুলি বন্ধ করা হয়েছে এবং ছাত্র ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্কুল এবং ব্যবসাগুলিকে সেই দিনের জন্য বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জাপানে টাইফুন একটি সাধারণ ঘটনা, কারণ দেশটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত।সেখানে, প্রতিটি টাইফুন তার নিজস্ব অনন্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে এবং ঝড়ের তীব্রতা এবং দিকের মতো কারণের উপর নির্ভর করে প্রভাব পরিবর্তিত হতে পারে।এবারের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে সাধারণ টাইফুন নয় অনেকটা অপ্রত্যাশিত প্রকৃতির হতে চলেছে তা সেখানকার মানুষ এবং কর্তৃপক্ষের আগাম প্রস্তুতি বলে দিচ্ছে।
টাইফুন ইউন-ইউং-এর তীব্রতার কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। ক্রমবর্ধমান সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা, অন্যান্য বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার সাথে মিলিত হয়ে, টাইফুনের গঠন এবং তীব্রতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায়, জলবায়ু ব্যবস্থায় ভবিষ্যতে আরও এই ধরনের গুরুতর আবহাওয়ার ঘটনাগুলির ঝুঁকি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই আসন্ন টাইফুনের মুখে, বাসিন্দাদের জন্য তাদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ ও নির্দেশনা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।নাগরিকদের জিনিসপত্র সুরক্ষিত রাখা, প্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ করা এবং ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপরন্তু, সময়মত আপডেট এবং সতর্কতা পাওয়ার জন্য JMA-এর মতো তথ্যের নির্ভরযোগ্য উৎসের মাধ্যমে অবগত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও জাপানের জনগণ অসংখ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেছে এবং তাদের দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে।বর্তমানে টোকাই এবং কান্টো অঞ্চল টাইফুন ইউন-ইউং-এর আগমনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ।আশাকরা যাচ্ছে তারা প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে, টাইফুনের সম্ভাব্য প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে এবং আবার শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন