আমন্ত্রণপত্রে, বর ও কনের নামের সাথে আইআইটি লেখায় বিতর্ক সোশ্যাল মাধ্যমে  

উত্তরাপথঃ বিবাহের সময়, অভিনব এবং ডিজাইনার আমন্ত্রণ কার্ডগুলি সর্বদা সকলের আলোচনায় পরিণত হয়। কিছু আমন্ত্রণ পত্র বিলাসবহুল চকোলেটের সাথে কাস্টমাইজ করে বানানো হয়,আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরিবেশের কথা মাথায় রেখে বায়োডিগ্রেডেবল কার্ডের সাথে  উপহার হিসাবে গাছ দেওয়া হয়।  সম্প্রতি, একটি পুরাতন বিবাহের আমন্ত্রণপত্র ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে যা বর এবং কনের শিক্ষাগত যোগ্যতা গুলিকে হাইলাইট করে বানানো হয়েছে । অর্থাৎ কার্ডে বর ও কনের নামের সাথে তাদের পড়াশোনার ডিগ্রিকেও যুক্ত করা হয়েছে।

 ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা আমন্ত্রণপত্রে, বরের নাম এর পাশে আইআইটি বোম্বে-এর নাম যুক্ত দেখানো হয়েছে, অন্যদিকে কনের নামের সাথে আইআইটি দিল্লির নাম যুক্ত দেখানো হয়েছে।

 বিয়ের আমন্ত্রণটি মহেশ নামে এক ব্যক্তি শেয়ার করেছেন। তিনি পোস্টটির ক্যাপশন দিয়েছেন, “বিয়ে করার জন্য আপনার যা দরকার তা হল প্রেম।” শেয়ার করার পর থেকে, কার্ডটি ৫৩ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৪০০ টিরও বেশি লাইক পেয়েছে।

 একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আমন্ত্রণে তার পজিশন, বেতন, লিঙ্কডিন প্রোফাইল উল্লেখ না করায় তিনি হতাশ”।

আর একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, কয়েক দশক আগে, যখন ডিগ্রি পাওয়া কঠিন ছিল, তখন কার্ডে বিএসসি, বিকম-এর মতো ডিগ্রির উল্লেখ করা একটি বড় বিষয় বলে মনে করা হত।

 অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আমি সেখানে ছিলাম, এটিতে কাজু কাটলি, বিয়ের পিঠা এমনকি চাট সম্পর্কেও লেখা ছিল।“

তবে এই মজার প্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কে লোকেদের একটি জিনিস মনে রাখা উচিত যে এই বর ও কনের নামের সাথে তাদের ডিগ্রি যোগকরার এই প্রবণতাগুলি প্রায়শই একটি বিবাহকে স্মরণীয় করে তোলা এবং লোকেদের মনে হাসি ফোটাতে বোঝানো হয়৷ আনন্দ এবং উত্তেজনার একটি উপলক্ষ হল বিয়েএই কার্ড শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির এক চেষ্টা বলেও কারও কারওমত ।তাদের মতে এই কার্ডটি চিরাচরিত জাতিগত ও বর্ণগত কাঠামো যা ভারতের মত এতিহ্যবাহী দেশে প্রধান ভূমিকা পালন করত বর্তমানে এই কার্ডটি জাতি ও ধর্মের উপরে উঠে শুধুমাত্র যোগ্যতার ভিত্তিতে এক নতুন সমাজ গঠনের ইঙ্গিত বাহী।  

আবার এক বড় অংশের লোক বলছেন,জীবনসঙ্গী বাছাই করার সময় শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা হলেও, এটি একমাত্র প্যারামিটার হওয়া উচিত নয়। যদিও শিক্ষা একজন ব্যক্তির বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা নির্দেশ করতে পারে । তবে এটি তাদের চরিত্র, মূল্যবোধ বা মানসিক মিলন তৈরি করতে পারে না।

বিবাহ একটি আজীবন এক সাথে চলার প্রতিশ্রুতি যা মানসিক, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সামঞ্জস্যের সাথে জড়িত। এর জন্য প্রয়োজন মূল্যবোধ, লক্ষ্য এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা। যদিও শিক্ষা এই কারণগুলিতে অবদান রাখতে পারে, তবে এটি জীবনসঙ্গী হিসাবে একজন ব্যক্তির উপযুক্ততার একমাত্র পরিমাপ নয়। তবে আশা করা যায় এই একটি বিয়ের কার্ড নিয়ে বিতর্ক সামাজিক মাধ্যম আরও দীর্ঘ চলবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


কতো অজানা রে

মৈত্রেয়ী চৌধুরী: ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা করতে গেলেই আমাদের মনে যে সব সৌধের প্রসঙ্গ মনে আসে তারমধ্যে পার্লামেন্ট ভবন একটা অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থান। বহু পর্যটক এই ভবন দেখতে যান. কিন্তু জানেন কি, এই পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন কে বানিয়েছিলেন ? 10 জনকে জিজ্ঞেস করলে 9 জনই বলতে পারবেন না। যাঁরা খুব ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন অথবা গুগুল সার্চ করে থাকেন, তাঁরা হয়তো উত্তরটা দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন বানিয়েছিলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি এডুইন লুটিয়েন। তাঁর সহকারী ছিলেন আরেক ব্রিটিশ স্থপতি হার্বার্ট বেকার। 1927 খ্রিস্টাব্দে এই ভবনটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় এবং ব্রিটিশ .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়

এ যেন বহুদিন পর বিজেপির চেনা ছন্দের পতন। হিমাচল প্রদেশের পর কর্ণাটক কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির বিজয়রথকে থামিয়ে দিল ।২০১৮ পর থেকে লাগাতার হারতে থাকা একটি দল আবার ২০২৪ সাধারণ নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক হয়ে গেল । ২২৪ সদস্যের কর্ণাটক বিধানসভায় সরকার গঠন করতে গেলে প্রয়োজন ১১৩টি আসন সেখানে কংগ্রেস একাই পেয়েছে ১৩৬টি আসন, বিজেপি পেয়েছে ৬৫ টি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার জেডিএস পেয়েছে ১৯টি এবং অন্যান্য ৪ টি আসন পেয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বিজেপির ৩৯ টি আসন কমেছে এবং কংগ্রেসের বেড়েছে ৫৭টি আসন এবং জেডিএসের কমেছে ১৮ টি আসন।   কর্ণাটকে কংগ্রেসের এই সাফল্য কি রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠনের ফল না কি কর্ণাটকের আগের ক্ষমতাশীল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ । কর্ণাটকে কংগ্রেসে অনেক বড় নেতা রয়েছে।  প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শিবকুমার দক্ষ সংগঠক। আগের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে।  ভোটের আগে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সাভাড়ি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির প্রচারের সবচেয়ে বড় মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিজেপির প্রচারে সব নেতারাই মোদীর নাম করেই ভোট চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ।কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি সেই সাথে কংগ্রেসের লাগাতার প্রচার যা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুরকে আরও তীব্র করেছে। তাই শুধুমাত্র মোদী ম্যাজিকের উপর ভর করে নির্বাচন জেতা যে  আর বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয় কর্ণাটকের জনগণ চোখে হাত দিয়ে তাই দেখিয়ে দিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

স্বপ্নপূরণ না হলেও জ্যাভিলিনে সোনা জিতলেন নীরজ

উত্তরাপথ: দোহায় ডায়মন্ড লিগে জ্যাভিলিনে সোনা জিতলেন নীরজ চোপড়া কিন্তু তার জ্যাবলিনে ৯০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করার স্বপ্নপূরণ হল না । দোহায় তার জ্যাভিলিন থামল ৮৮.৬৭ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। গতবছরও এই লিগে প্রথম পদক জিতেছিলেন নীরজ। দোহার সুহেম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে প্রথমবার জ্যাভলিন ছুড়েই চমক দেন নীরজ। প্রথমবারেই তার জ্যাভলিন চলে যায় ৮৮.৬৭ মিটার। ২০২২ সালে জুরিখের ডায়মন্ড লিগে সফলতা হয়েছিলেন নীরজ এবং টোকিও অলিম্পিকে সোনা জিতেছিলেন তিনি। তার লক্ষ্য ছিল ৯০ মিটারের গণ্ডি পেরনোর কিন্তুসেই লক্ষ্য .....বিস্তারিত পড়ুন

হিউম্যানয়েড রোবট ARTEMIS রেডি পরবর্তী RoboCup-এর জন্য

অনয় কিরণ মাহাতো: কেমন যেন লাগে রোবট এর কথা শুনলে। তারপরে আবার হিউম্যানয়েড, ভাবা যায়। হিউম্যানয়েড রোবট এক জটিল anthropomorphic কৃত্রিম মেশিন যা রোবোটিক্স, লোকোমোশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এই হিউম্যানয়েড রোবর্ট এর বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে। ১৮১০ সালে জার্মানির ফ্রেডলিচ কাউফম্যানন প্রথম তৈরি করেছিলেন এক ট্রাম্পেট সৈনিক রোবর্ট। এরপর হুমানোইড রোবর্ট তৈরি করেন আরবের একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আল-যাজরি। এরপর লিওনার্দো দা ভিঞ্ছির আদলে জাপানের ওসাকা ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর ঈশিগুর .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top