

রেডিও টেলিস্কোপ RT-32 (নিকোলাস কোপার্নিকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমন্দিরে, Toruń, পোল্যান্ড); এ ধরা পড়ছে বিভিন্ন রেডিও সংকেত.ছবি সৌজন্য – উত্তরাপথ
উত্তরাপথঃ এ যেন এক যুগান্তকারী আবিষ্কার, পৃথিবীতে দূরবর্তী এক্সোপ্ল্যানেট থেকে বারবার ভেসে আসছে একটি রেডিও সংকেত ।বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এই ভেসে আসা সঙ্কেতটি শনাক্ত করেছেন, যা আমাদের পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে জীবনের অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।বিজ্ঞানের এই আবিস্কার যেমন আমাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে তেমনি আমাদের সৌরজগতের বাইরে বুদ্ধিমান প্রাণীর সম্ভাব্য অস্তিত্ব সম্পর্কে আমাদের জানার আগ্রহকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ।
ফাস্ট রেডিও বার্স্ট (FRB) নামে পরিচিত রেডিও সংকেত সংকেতটি প্রথম কানাডিয়ান হাইড্রোজেন ইনটেনসিটি ম্যাপিং এক্সপেরিমেন্ট (CHIME) রেডিও টেলিস্কোপে ২০২০ সালে বিজ্ঞানীদের একটি দল প্রথম সনাক্ত করেছিল। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূর থেকে FRB সঙ্কেতটি বার বার পৃথিবীতে আসছিল । বার বার আসাFRB সংকেতটি থেকে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে এর উৎস পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহ।কিন্তু ঠিক কোন গ্রহ থেকে সঙ্কেতটি আসছে সেই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে FRB সঙ্কেত থেকে পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমান জীবনের অস্তিত্ব সম্পর্কে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল।
পুনরাবৃত্তি করা FRB SDSS J015800.28+654253.0 নামে পরিচিত এই রেডিও সংকেতটি অন্য কোনও গ্যালাক্সি থেকে উদ্ভূত বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। সেই গ্যালাক্সির মধ্যে, বিজ্ঞানীরা SDSS J015800.28+654253.0b নামে একটি সম্ভাব্য এক্সোপ্ল্যানেট চিহ্নিত করেছেন, যা সংকেতের উৎস হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান। এই এক্সোপ্ল্যানেটটি এমন এক বাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত, যেখানে জলের অস্তিত্বের সম্ভাবনা রয়েছে , যা-জীবনের জন্য একটি মূল উপাদান আমরা জানি।
একটি সম্ভাব্য বাসযোগ্য এক্সোপ্ল্যানেট থেকে উদ্ভূত সংকেতের পুনরাবৃত্তি আমাদের বহির্জাগতিক জীবনের সন্ধানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আগে আমরা এলিয়নের অস্তিত্ব সম্পর্কে বিভিন্ন সিনেমা বা গল্পে পরেছি ,কিন্তু বিজ্ঞানীদের এই আবিস্কার পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কে আমাদের ধারনা দেয় ।আমাদের পৃথিবীর বাইরে এমন কোনও উন্নত সভ্যতা রয়েছে যেখানকার প্রানীরা এই শক্তিশালী রেডিও সংকেতগুলি তৈরি করে বিশাল দূরত্ব জুড়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে।
তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগে আরও বেশী বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন । বর্তমানে বিজ্ঞানীরা এখন আরও বিশদভাবে সঙ্কেতের বিষয়টি বিশ্লেষণ করছেন। এই ব্যাপারে সার্চ ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স (SETI) সম্প্রদায় সক্রিয়ভাবে FRB সংকেত নিরীক্ষণ করছেন , যা থেকে আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে আমরা আরও অনেক তথ্য পাব।
বার বার আসা FRB সংকেতের আবিষ্কারটি উত্তেজনাপূর্ণ হলেও এই বিষয়ে সর্বশেষ সিদ্ধান্তে পৌঁছনর আগে আরও বেশী বৈজ্ঞানিক সতর্কতার প্রয়োজন।এই বিষয়ে গবেষকরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রোফিজিকাল ব্যাখ্যা অন্বেষণ করছেন যা সংকেতের জন্য দায়ী হতে পারে। সম্ভাব্য উত্সগুলির মধ্যে রয়েছে উচ্চ চুম্বকীয় নিউট্রন তারা, ব্ল্যাক হোল বা এমনকি মহাজাগতিক স্ট্রিং।সুতরাং বহিবিশ্বের বুদ্ধিমত্তাকে সংকেতের জন্য দায়ী করার আগে এই সম্ভাবনাগুলিও বিবেচনা করা অপরিহার্য।
আরও পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন