সম্পাদকীয়

নির্বাচন যেখানে মূল লক্ষ্য …

এবারের লোকসভা কোনও রকম আলাপ আলোচনা ছাড়াই প্রায় ৪৫ লক্ষ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় বাজেট অনুমোদন করেছে। শাসক ও বিরোধী পক্ষের বাদানুবাদে প্রত্যাশিতভাবেই সংসদের দ্বিতীয় পর্বের বাজেট অধিবেশন তেমন কোনও কাজ ছাড়াই শেষ হয়েছে।  সংসদে লাগাতার হট্টগোল দেখে এই অধিবেশন নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হলে, আর কিছু না হউক সরকারি কোষাগার থেকে দেশের জনগণের দেওয়া ট্যাক্সের কিছু টাকা বাঁচানো যেত।  সংসদ চলতে না দিয়ে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের একে অপরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই, কারণ কোথাও না কোথাও উভয় দলই এর জন্য দায়ী।

আদানি মামলায় জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি (জেপিসি) তদন্তের দাবিতে বিরোধীরা তাণ্ডব চালালে, শাসকদলও রাহুল গান্ধীকে লন্ডনে দেওয়া বিবৃতির জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে অনড় থাকল।  পক্ষ ও বিরোধী দলের এসব দাবির কোনো বিশেষ গুরুত্ব ছিল না।  আদানি মামলায় জেপিসি তদন্তের ন্যায্যতা শেষ হয়ে গিয়েছিল কারণ সুপ্রিম কোর্ট একটি ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।  উল্লেখ্য, এ কমিটি গঠনে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।  সুপ্রিম কোর্ট নিজেই কমিটির সদস্য বাছাই করেছে।  এর পরেও বিরোধীরা সন্তুষ্ট হয়নি, কারণ এটি হওয়ার ছিল না। সংসদে হট্টগোল করার জন্য বিরোধীদের একটি অজুহাত দরকার ছিল।

 আশ্চর্যের বিষয় হল এই সময় শাসক দলও সংসদে তোলপাড় সৃষ্টি করে এবং লন্ডনে দেওয়া রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে জোর দেয়। রাহুল গান্ধীর বক্তব্যে শাসকদলের আপত্তি থাকতে পারে কিন্তু তার ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ ছিলনা যার জন্য লোকসভার পুরো অধিবেশন নষ্ট করা যেতে পারে। রাহুল গান্ধী যদি তার বক্তব্য কে ভুল হিসাবে মানতে প্রস্তুত না হন তবে ক্ষমতাসীন দল বা অন্য কেউ কী করতে পারে?  

ক্ষমতাসীন দল নিজেই সংসদে তোলপাড় সৃষ্টি করে সংসদ চলতে না দেওয়ার ঘটনা খুবই বিরল, কিন্তু এবার তা ঘটল। ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দল উভয়েই আসল লক্ষ্য বিভিন্ন রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। তাই দেশের লোকের স্বার্থের কথা ভুলে তারা মত্ত থাকলেন আসন্ন নির্বাচনের দলীয় এজেন্ডা ঠিক করতে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে

উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি।  ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে।  আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি।  এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।  সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে।  এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top