জাপানের চাঁদ মিশন: চন্দ্রযান-3 থেকে কি আলাদা?

 উত্তরাপথঃ বহুল প্রত্যাশিত জাপানের চাঁদ মিশন যা SLIM (স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন) নামে পরিচিত, স্থগিত করা হয়েছে, যা মহাকাশ উৎসাহী এবং বিজ্ঞানীদের হতাশ করেছে। মিশন, যা ২০২২ সালে শুরু হওয়ার কথা ছিল সেই সময় প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই মিশন পিছিয়ে যায়,এবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে পিছিয়ে এল জাপান।সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে JAXA Tanegashima স্পেস সেন্টার থেকে ২৭ আগস্ট এই মিশনটি শুরু হওয়ার কথা ছিল ।  এই নিয়ে দু’বার চাঁদের পথে পা বাড়িয়েও  পিছিয়ে আসতে হল জাপানকে ।  

 ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদে নামার পরই চাঁদে পাড়়ি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল জাপানের। ভারতের মতোই এশিয়ার এই প্রযুক্তিপ্রেমী দেশও চায় চাঁদে মহাকাশ যান নামাতে। কিন্তু এরই মধ্যে দু’বার ভেস্তে গেল তাদের পরিকল্পনা। মঙ্গলবার জাপান জানাল, আপাতত সেপ্টেম্বরের আগে তাদের ‘চন্দ্রযান’ চাঁদে পাড়ি দেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ হিসাবে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, আসন্ন ঝড়ের ভয়েই এই সিদ্ধান্ত।

চাঁদে মহাকাশ যান নামাতে পারলে জাপান হবে এই কৃতিত্বের অধিকারী এশিয়ার তৃতীয় দেশ এবং পৃথিবীতে পঞ্চম। এর আগে চাঁদের জমিতে সফ্ট ল্যান্ডিং করতে পেরেছে যথাক্রমে রাশিয়া, আমেরিকা, চিন এবং ভারত। তবে জাপান ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করবে না। জাপানের ‘চন্দ্রযান’ নামের চাঁদের সামনের দিকে। অর্থাৎ যে অংশটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান, সেখানে। চাঁদের বিষুব রেখার ১৩ ডিগ্রি দক্ষিণে এবং দ্রাঘিমা রেখার ২৫ ডিগ্রি পূর্বে রয়েছে শিওলি গিরিখাত। তারই ঢালু অংশে নামার কথা জাপানের চন্দ্রযানের।

তবে জাপানের চাঁদ মিশন এর মূল উদ্দেশ্য হল সঠিক চন্দ্র অবতরণ কৌশল প্রদর্শন করা। অর্থাৎ  চ্যালেঞ্জিং অবতরণ এলাকাগুলিকে আরও অ্যাক্সেসযোগ্য করে তুলতে  সফল অবতরণ কৌশল নির্মাণ করা । এবার আসা যাক জাপানের চাঁদ মিশন কিভাবে চন্দ্রযান-3 থেকে আলাদা? JAXA-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, জাপানের মুন মিশন, SLIM, যা Moon Sniper SLIM প্রজেক্ট নামেও পরিচিত।জাপানের এই মিশনটি ভারতের চন্দ্রযান-৩ থেকে আলাদা কিন্তু চন্দ্রযানের মতো ভবিষ্যতের চাঁদ অভিযানে সাহায্য করবে। SLIM হল একটি ছোট মাপের অন্বেষণ ল্যান্ডার যা চাঁদের পৃষ্ঠে পিনপয়েন্ট অবতরণে সক্ষম , সেই সাথে জাপান এই মিশনে চাঁদে অবতরণে ব্যবহৃত সরঞ্জামের আকার এবং ওজন  এই দুতি বিষয় হ্রাস করার উপর জোর দিয়েছে । সেই সাথে এটি  চাঁদের উৎস সম্পর্কে তদন্তের জন্য কম-মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশে অন্বেষণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। জাপানের এই মিশন সফল হলে ভবিষ্যতের  সৌরজগতের বৈজ্ঞানিক তদন্তের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে এটি বিবেচিত হবে

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়

উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে।  সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি

উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা  ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top