নাচনিশিল্পী পস্তবালাদেবীর জীবনকথা

ড . নিমাইকৃষ্ণ মাহাত: মানভূমে বর্তমানে প্রায় সত্তর জন নাচনিশিল্পী রয়েছেন । বর্তমানে তাঁরাই মানভূমের এই প্রাচীন নৃত্যশৈলী ধারক-বাহক । মানভুমের বিখ্যাত নাচনিশিল্পী পস্তবালাদেবীর জীবনকথা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করা হল । তাঁর জীবন সংগ্রামের সমস্ত দিকের বিস্তারিত বর্ণনা করা সম্ভব হয়নি । সামগ্রিকভাবে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রবাদপ্রতিম নাচনিশিল্পী পস্তবালাদেবীর জীবনকথা বর্ণনা সম্পূর্ণভাবে শিল্পীর সঙ্গে মৌখিক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে রচিত।

পস্তবালাদেবী কর্মকার ও মাদলবাদক দুর্যোধন কর্মকার।

২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া লালন পুরস্কার পান নাচনিশিল্পী  পস্তবালাদেবী কর্মকার। ‘ছোটনাগপুরের বুলবুল‘ খ্যাত সিন্ধুবালাদেবীর পর নাচনিশিল্পী হিসাবে  পস্তুবালাদেবীই  পেলেন এই পুরস্কার । এখন প্রচারের আলোয় তিনি। কিছু আর্থিক সমাগমও হচ্ছে। কিন্তু আজ তিনি যে জায়গায় পৌঁছেছেন তার পিছনে রয়েছে এক দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। সেই ইতিহাসের উপর একটু আলোকপাতের চেষ্টা করা হল।

পস্তবালাদেবী কর্মকার ১৯৭০ সালে পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা থানার অন্তর্গত  কৈড়া-কর্মাট্যাঁড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম মনোহর সিং সর্দার এবং মায়ের নাম বিমলা মুদি ( কড়া )। পরবর্তীকালে জীবনসঙ্গী হিসাবে পেয়েছিলেন বলরামপুর থানার ডুমারি গ্রামের রসিক বিজয় কর্মকারকে। রসিক বিজয় কর্মকারই পস্তুবালাদেবীকে ১৮ বছর বয়সে নাচনি নাচের জগতে নিয়ে আসেন। বিজয়ের হাত ধরেই পস্তুবালাদেবী ক্রমে পরিচিত হয়ে উঠেন নাচনি শিল্পী পস্তুবালাদেবী কর্মকার রূপে।

পস্তবালাদেবীর বাবার বাড়িতে নাচ-গানের ঐতিহ্য ছিল । তাঁর মা বিমলা মুদি ধুমড়ি নাচ করতেন ও ঝুমুর গাইতেন। ছোটোবেলায় আড়াল থেকে তা পস্তবালাদেবী দেখতেন । তখন তিনি খুব একটা  নাচ-গান করতেন না ।  করম পরবে মায়ের নাচের ঘাগরা পরে মায়ের দলের সাথে নাচ করতেন । দ্যাঁড় নাচের বাজনার তালে তালে ঘাগরা পরে নাচতেন । স্বপ্ন দেখতেন ভবিষ্যতে নাচ করবেন, ঝুমুর গাইবেন ।

পস্তবালাদেবীর খুব কম বয়সে বিয়ে হয়ে যায় দাদুর বয়সি এক পাত্রের সঙ্গে । স্বামী মানবাজার থানার বাঁধডি গ্রামের পগা সিং সর্দার। শ্বশুর বাড়িতে দু তিন মাস থাকার পরে তাঁর প্রবল জ্বর হয়েছিল। এই  সময় নিজের অজ্ঞাতসারে ও শ্বশুরবাড়ির চক্রান্তে মানবাজার হাসপাতালে হওয়া এক অপারেশনের ফলে যৌবনের প্রথমারম্ভেই মা হওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন পস্তুবালাদেবী । শ্বশুর বাড়ির লোকেরা চাইতেন  পস্তুবালা শুধু নাচ গান করে রোজগার করবে। মা হলে সেই কাজে ভাটা পড়বে । শ্বশুরবাড়ির অনাদর, অবহেলা, অপমান সহ্য করতে না পেরে তিনি মেট্যালা গ্রামে এক মাসির বাড়িতে চলে আসেন । সেখানে লোকের বাড়িতে ঝি- এর কাজ করতেন । বছরে একটা কাপড় ও দিনে দুবার খেতে দিত । মাখার জন্য একটুখানি সরষের তেল এবং আট বা দশ দিন অন্তর একটি সাবান দিত । থালাবাসন ধোয়া,  কাপড় কাচা , ধান কাটা , ধান ঝাড়া – সবই করতে হত পস্তুবালাকে । কিন্তু দুর্ভাগ্য তাঁর ছায়া সঙ্গী । এখানেও পস্তুবালাকে দশ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার এক চক্রান্ত চলতে থাকে । প্রতিবেশীদের কাছ থেকে তিনি তা জানতে পারেন। মাসির দূর সম্পর্কের এক দিদি থাকেন বলরামপুর থানার সাগমা পোস্ট অফিসের অন্তর্গত ডুমারি গ্রামে । ঐ দিদির সূত্রেই বর্তমান রসিক বিজয় কর্মকারের সাথে পরিচয় হয় পস্তুবালাদেবীর। পস্তুবালাদেবী  ভেবে দেখলেন জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নাচ-গানকেই বেছে নিতে হবে । তিনি রসিকের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সম্মত হলেন। রসিকের বিবাহিত স্ত্রী বর্তমান । দুটি সন্তান রয়েছে । রসিকের বাড়িতে ননদ , ঠাকুরঝি ও দেওর আছে । রসিকের বাড়ির লোকেরা পস্তুবালার আগমনে খুশি নয় । রসিকের বাড়ির লোকেরা পস্তুপালাকে লক্ষ্য করে রসিককে বলেছিলেন –   

নৃত্য প্রদর্শনের পূর্বে নাচনিশিল্পী দের সাজসজ্জা ও প্রসাধনে ব্যস্ত।

ইয়াকে কেন নিয়ে আলি?

পাড়া গাঁয়ের লোকেরা যে প্রবাদ বলে অর্থাৎ  ইয়ার লাদেই কি মাড়ুলি দিব ?

সেই কোথায় রসিকের বাড়ির লোকেরা পস্তবালাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিল । এইভাবে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান সহ্য করে এক বছর পার হলো। একটা ছোটো পাত্রে খেতে দিত । তাতে পেটও ভরত না । এইভাবে এক বছর থাকার পর রসিকের সাথে পস্তুবালা বোকারো চলে গেলেন মাটি কাটতে। মাটি কাটার টাকাও শ্বশুরবাড়িতে পাঠাতে হত। বোকারোতে এক বছর কাজ করার পর রসিকের সাথে ডুমারি গ্রামে ফিরে এলেন। পস্তবলার অবস্থা কিছু পাল্টালো না। রসিকের পরিবারের লোকেরা বলেছিল নাচনির হাতে খাবার খেলে পাতে নেবে না,  সামাজিকভাবে এক ঘরে হতে হবে এবং রসিকের সন্তানের সমাজে বিয়ে হবে না।

রসিক বিজয় কর্মকার পস্তবালার পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন – ‘এবার তাহলে বামুনের হাতে খাব। তাতে নিশ্চয়ই বামুন হয়ে যাব। তাহলে আর কামারদের হাতে খেতে হবে না। ‘

আসলে রসিকের পরিবারের অন্যান্যরা এদের রোজগার করা টাকাকে ভালোবাসত, এদের নয়। এদের রোজগার করা টাকা রসিকের পরিবার লুটে নিত। পস্তুবালাকে এক কাপড়ে সারা বছর কাটাতে হত । তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা পরিবার থেকে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন।

রসিকের হাত ধরে পস্তুবালা প্রথম নাচ শেখেন সিন্ধুবালাদেবীর কাছে । সিন্ধুবালা দেবীই তাঁর গুরু। বিমলাদেবী, বালিকাদেবী, পার্বতীদেবী, সুশীলাদেবী প্রমূখ নাচনিরা যেখানে যেখানে নাচ দেখাতেন সেখানেই পস্তুবালা চলে যেতেন । তিনি নাচনিদের অঙ্গভঙ্গি, পায়ের কাজ,  হাতের কাজ , কোমরের কাজ সামনে বসে দেখতেন। গানের দিকে ততটা নজর থাকত না। এগুলো দেখে তিনি নাচ অনেকটা আয়ত্ত করতে পেরেছেন।বলরামপুর থানার তেঁতলো গ্রামে পঞ্চাশ টাকা পারিশ্রমিকে তিনি প্রথম আসরে নামেন ।তারপর ধীরে ধীরে অনুষ্ঠান পিছু পারিশ্রমিক একশো, দুশো , তিনশো , পাঁচশো  টাকা – এইভাবে বাড়তে লাগল। বলরামপুরের ডাক্তার সুখেন বিশ্বাসের উদ্যোগে তিনি বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। কলকাতার বাগুইহাটি, শিয়ালদা কৈবর্ত্য সমিতি, শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, জোড়াসাঁকর ঠাকুরবাড়ি ইত্যাদি স্থানে অনুষ্ঠান করেছেন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে মেয়েদের ঝুমুর নাচ ও গানের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ওখানে ষোল দিনের অনুষ্ঠান কর্মশালা ছিল। কিন্তু পস্তুবালা পুরো ষোল দিন থাকতে পারেননি। চার দিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরেই তাকে পুরুলিয়া ফিরে আসতে হয় ।

ঐ সময় পুরুলিয়া শহরের সন্নিকটে সুরুলিয়া গ্রামে নাচনিদের বহু সংগ্রামের ফলে গড়ে ওঠা  ‘মানভূম লোকসংস্কৃতি ও নাচনী উন্নয়ন সমিতি’ র বাৎসরিক অনুষ্ঠান হয়েছিল। সেখানে পস্তুবালার উপস্থিতি অপরিহার্য ছিল। তাই দায়িত্ব ও কর্তব্যের টানে ঠাকুরবাড়ির কর্মশালার দৈনিক দুই হাজার টাকা ভাতা, থাকা, খাওয়ার স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে দারিদ্রপীড়িত একনিষ্ঠ শিল্পী পস্তুবালাদেবী সুরুলিয়ায় নাচনিদের অনুষ্ঠানের অবৈতনিক কাজে চলে আসেন । এতে আর্থিক লাভ নয়, তাঁর শিল্পীসত্তারই জয় হয়। এখানেই তাঁর বিশিষ্টতা।

নাচনিদের জীবন খুবই কষ্ট ও বেদনার সঙ্গে অতিবাহিত হয় । বাইরের পোশাকের হয়তো বাহার থাকে কিন্তু অন্তরে অন্তঃসলিলা রূপে বয়ে চলে অন্তহীন দুঃখের স্রোত । সামাজিক সম্মান নেই, পিতৃগৃহ, শ্বশুরবাড়ি তথা রসিকের বাড়ি – কোথাও সম্মান ও আদর নেই। যতদিন যৌবন , যতদিন নেচে – গেয়ে টাকা রোজগার করতে পারেন ততদিনেই নাচনিদের খাতির । নাচনিদের জীবনের পরিণতি খুবই বেদনাদায়ক । মারা গেলে তাদের দেহ কেউ সৎকার পর্যন্ত করেনা। গন্ধ ছড়াবে বলে দেহ দড়িতে বেঁধে টেনে নিয়ে গিয়ে শ্মশানে বা ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়। মৃতদেহ শিয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খায়।

পস্তবালাদেবী কর্মকার ও রসিক বিজয় কর্মকার ।

নাচনিদের দুরবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এবং নিজেদের শিল্পী হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার জন্য নাচনিরা একটি সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। বহু সংগ্রামের পর গড়ে ওঠে নাচনিদের নিজস্ব সংগঠন ‘মানভূম লোকসংস্কৃতি ও নাচনী উন্নয়ন সমিতি’। সহযোগিতায় এগিয়ে আসে দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। ‘মানভূম লোকসংস্কৃতি ও নাচনী উন্নয়ন সমিতি’র বর্তমান সেক্রেটারি হলেন নাচনিশিল্পী পস্তুবালাদেবী কর্মকার । বর্তমানে পুরুলিয়া শহরের সন্নিকটে সুরুলিয়া গ্রামে এই সংগঠনের অফিস রয়েছে।

পস্তবালাদেবী জি বাংলা চ্যানেলের দিদি নম্বর – ১  অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিনেতা হিরণের সঙ্গে মূল্যবান সময় কাটিয়েছেন । জীবনে তিনি যেমন অদম্য লড়াই করেছেন, তেমনি বহু সম্মান ও পুরস্কারও পেয়েছেন। 

তাঁর আক্ষেপ বর্তমানে  নাচনিদের সার্বিক অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলেও এখনও অনেক নাচনি দুঃখ, দারিদ্র ও অসহায়তার অন্ধকারে নিমজ্জিত ।এখনও অনেক ক্ষেত্রেই নাচনি মারা গেলে রসিকের পরিবার দেহ সৎকার করে না।  মৃতদেহ ফেলার জন্য ঘাসিদের ডাকা হয় । পস্তুবালাদেবীর কথায় – ‘ঘাসিরাও তো মানুষ । তাহলে ওদেরই ধর্ম হল।’

খবরটি শেয়ার করুণ

2 thoughts on “নাচনিশিল্পী পস্তবালাদেবীর জীবনকথা”

  1. কালিসাধন মুখার্জী

    Inspiring..In every sector many people are deprived. After long fight, people get little success. It is very important to acknowledge their achievements.

    Thank you for sharing.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top