

নিমাইকৃষ্ণ মাহাতঃ সাবেক মানভূম তথা অধুনা পুরুলিয়া জেলা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের মূলনিবাসী কৃষক সমাজের কৃষি- ব্যবস্থায় পরিমাপ ও হিসাব-নিকাশের জন্য বিভিন্ন একক (Unit ) বা পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে । এগুলি এতদ্ অঞ্চলের লোকসংস্কৃতিরই পরিচয়ক । যেমন : –
ক ) পুরুলিয়া জেলার অধিকাংশ স্থানে ধান বা চাল পরিমাপের পদ্ধতি :
পুরুলিয়া জেলার অধিকাংশ স্থানে কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে ধান বা চাল পরিমাপের সর্বনিম্ন একক হল ‘ ছটাক ‘ ।
৪ ( চার ) ছটাক = ১ পুয়া
৪ ( চার ) পুয়া = ১ পাই
২ ( দুই ) পাই = ১ সের
১০ ( দশ ) সের = ১ সোলি
৪ ( চার ) সোলি বা ৪০ সের = ১ মন *
৮ ( আট ) মন = ১ বাইন্দ **
খ ) ধান লাগানো বা ধান কাটার সময় ব্যবহৃত পরিমাপক পদ্ধতি :
সাধারণভাবে , ধান লাগানো বা ধান কাটার সময় পরিমাপক পদ্ধতির সর্বনিম্ন একক হল ‘ আঁটি ‘।
৪ (চার ) আঁটি = ১ গন্ডা
২০ ( কুড়ি ) গন্ডা = ১ পণ
১৬ পণ = ১ কাহন
গ ) দক্ষিণ বাঁকুড়া অঞ্চলে ধান বা চাল মাপার সাধারণ পদ্ধতি :
দক্ষিণ বাঁকুড়া অঞ্চলের কৃষক সমাজে ধান বা চাল মাপার সর্বনিম্ন একক হল ‘ ছটাক ‘ বা ‘ চইঠি ‘ ।
৪ ( চার ) ছটাক = ১ কোনা
৪ ( চার ) কোনা = ১ পাই
২০ পাই = ১ সোলি
৮ সোলি = ১ মাপ
ঘ ) ধান কাটার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত পরিমাপের পদ্ধতি :
দক্ষিণ বাঁকুড়া অঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে ধান কাটার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত পরিমাপের সর্বনিম্ন একক হল ‘ হালা ‘ । ‘ হালা ‘ শব্দটির অর্থ হল ‘ গোছা ‘ । ধানের গাছি কাটতে কাটতে হাতের মুঠি ভরে গেলে তাকে ‘ এক হালা ‘ বলে ।
১ মুষ্টি ধানের গাছি = ১ হালা
২ হালা = ১ আঁটি
৬ আঁটি = ১ বিড়া
১৩ বিড়া = ১ পণ
১ পণ = ৮০ আঁটি ***
১৬ পণ = ১ কাহন
ঙ ) বাঁকুড়ার সিমলাপাল প্রভৃতি অঞ্চলে ধান বা চাল পরিমাপের একক হিসাবে ‘ আড়া ‘- এর প্রচলন দেখা যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে , বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের বিখ্যাতকবি কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর চন্ডীমঙ্গল ( অভয়ামঙ্গল ) কাব্যের ‘গ্রন্থ উৎপত্তির কারণ ‘ অংশে ‘ আড়া ‘ শব্দটির প্রয়োগ দেখা যায় –
‘ আড়রা ব্রাহ্মণ-ভূমি ব্রাহ্মণ যাহার স্বামী
নরপতি ব্যাসের সমান ।
পড়িয়া কবিত্ব বাণী সম্ভাষিণু নৃপমণি
পাঁচ আড়া মাপি দিলা ধান। ‘
আধুনিক ম্যাট্রিক পদ্ধতির প্রভাবে এখনো এইসব প্রাচীন একক বা পদ্ধতিগুলি মানভূমঅঞ্চল থেকে হারিয়ে যায়নি এবং এই অঞ্চলের কৃষকেরা এগুলি এখনো হিসাব-নিকাশ ও পরিমাপের একক হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
* কোন কোন জায়গায় ২ সোলিতে ১ মন।
** কোন কোন জায়গায় ১০ মনে ১ বাইন্দ।
*** প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , এক পণ = ৮০ আঁটি । এক্ষেত্রে অংকের নিয়মে হয় ১ পণ ( ৬ x ১৩ ) = ৭৮ আঁটি । কিন্তু এক পণ ধানের আঁটি বাঁধতে যে অতিরিক্ত ধানের গাছি দরকার হয় , তাকে সর্বমোট ২ আঁটি ধরা হয় । এইভাবে এক পণ = (৭৮ + ২ ) আঁটি অর্থাৎ ৮০ আঁটি ধরা হয়
আরও পড়ুন
Chandrayan 3: চন্দ্রযান-৩ সফল উৎক্ষেপণ, অবতরণ করবে ২৩ অগস্ট
উত্তরাপথ: চন্দ্রযান - ৩ প্রকল্পের সফল উৎক্ষেপণ প্রত্যক্ষ করল দূরদর্শনের মাধ্যমে আপামর ভারতবাসী । চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পের পরিচালক পি ভিরামুথুভেল এবং ইসরো প্রধান এস সোমানাথও তাদের আনন্দ ভাগ করে নিলেন যখন LVM3 M4 যানটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ হল। "চন্দ্রযান-৩, তার সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে, চাঁদের উদ্দেশ্যে তার যাত্রা শুরু করেছে। ইসরো জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের সময় মহাকাশযানের অবস্থা স্বাভাবিক ছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
নতুন DA র হার ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য
উত্তরাপথ: ডিএ হল ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স বা মহার্ঘ্য ভাতা। মূল্যস্ফীতির কারণে কর্মচারীদের অর্থনৈতিক অবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখতে বা সামঞ্জস্য করতে অতিরিক্ত আর্থিক সাহায্যের আকারে ডিএ দেয় সরকার। এটি কর্মচারীর মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ বেতনের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। সাধারণত, সরকার প্রতি ছয় মাসে (জানুয়ারি ও জুলাই মাসে) কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা করে। কোন বছরে মহার্ঘ ভাতা কত শতাংশ বাড়বে তা নির্ধারণ করতে সর্বভারতীয় উপভোক্তা মূল্য সূচকের সাহায্য নেওয়া হয়। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়
পশ্চিমবঙ্গের ছোট-বড় যে কোনও নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক হিংসা । সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়।রাজনৈতিক হিংসা যাতে না হয় নির্বাচনে তার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও হিংসা অব্যাহত থাকল, সারা রাজ্যজুরে ঘটল তেরোটি মৃত্যুর ঘটনা ।পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘট হিংসা রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহ নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে আমাদের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একাধিক কারণ থাকলেও বেকারত্ব সহ দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতি এর প্রধান কারণ । দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতির কারণে বেশীরভাগ গ্রামীন এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগ খুব কম। বিশেষত স্বল্প শিক্ষিত সেই সব মানুষদের যারা না পায় সরকারি চাকুরি না পারে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে, গ্রামীন অর্থনীতিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ এই শ্রেনীর অন্তর্গত .....বিস্তারিত পড়ুন
বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোট গঠনের বৈঠকে অংশ নিতে পারে ৩২টি দল
উত্তরাপথ: আগামী লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে বিরোধী জোট গঠনের জন্য বেঙ্গালুরুতে আগামী ১৭-১৮ জুলাই বিরোধী দলগুলির সমাবেশ হতে চলেছে। এই বৈঠকে ২৪টি রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, এবার বিরোধী দলে যোগ দিতে যাচ্ছে আরও নতুন ৮টি দল। এই দলগুলি হল, মারুমালারচি দ্রাবিড় মুনেন্দ্র কাজগাম, কঙ্গু দেস মক্কাল কাচ্চি, বিদুথালা চিরুথাইগাল কাচ্চি, বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দল, অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ, কেরালা কংগ্রেস জোসেফ, কেরালা কংগ্রেস মানি ।তবে বিরোধী জোটে যদি সব গুলি দল .....বিস্তারিত পড়ুন