এক নজরে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০২৪  

প্রীতি গুপ্তা – ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতা প্রায় সারা বছর বিভিন্ন উৎসব পালনের জন্য বিখ্যাত।  কথিত আছে কিছু লোক দুর্গাপূজা বা দীপাবলির সময় নয় শুধুমাত্র জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে কলকাতা আসে নিয়ম করে , কারণ এই সময় কলকাতা বইমেলা হয়।বইকেনা ছাড়াও অনেকেই এখানে আসেন শুধু বিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক বা সাহিত্যিকদের সাথে দেখা করতে এবং তাদের কাছ থেকে অটোগ্রাফ নিতে।

প্রসঙ্গত এই বছর গত ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ৪৭ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা এবং চলে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি বছরের মতো এবারও কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বছর বইমেলার থিম কান্ট্রি  ছিল গ্রেট ব্রিটেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের প্রকাশনা সংস্থাও  অংশগ্রহণ করেছে বইমেলায়।ছিল আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, পেরু ও কলম্বিয়ার মতো দেশও।

সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে অনুষ্ঠিত বইমেলা বইপ্রেমী এবং সাহিত্য উৎসাহীদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল।এখানে বইপ্রেমী পাঠকেরা একই সাথে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রকাশকদের বিভিন্ন প্রকাশনা দেখার সেইসাথে নতুন লেখক এবং সাহিত্যিকদের কাজগুলিও আবিষ্কার করার একটি অতুলনীয় সুযোগ পান। মেলার লক্ষ্য প্রকাশক এবং স্বাধীন লেখকদের তাদের সৃজনশীলতা প্রদর্শন এবং পাঠকদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা।

বই ছাড়াও, কলকাতা বইমেলা বাংলার সাংস্কৃতিকে তুলে ধরার এক অসাধারণ মাধ্যম।এছাড়াও মেলায় সাহিত্য আলোচনা, বই প্রকাশ, কবিতা আবৃত্তি, গল্প বলার সেশন ,কুইজ এবং সমসাময়িক বিষয়ে প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। বইমেলায় সাহিত্যের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পকলার প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয়। মেলার মাঠে, দর্শকরা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক শিল্পীদের শিল্পকাজ, প্রদর্শনী এবং পারফরম্যান্স প্রত্যক্ষ করতে পারেন। সাহিত্য এবং শিল্পের সংমিশ্রণ একটি অনন্য পরিবেশ তৈরি করে, যা বইমেলার সামগ্রিক অভিজ্ঞতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

প্রকাশনা শিল্পের পরিবর্তিত ধরনকে স্বীকৃতি দিয়ে, কলকাতা বইমেলা ডিজিটাল বিপ্লবকে গ্রহণ করেছে।এই বছর বই মেলায়  ই-বুক, অডিওবুক এবং ডিজিটাল প্রকাশনা প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি পৃথক বিভাগ খোলা হয়েছিল। জানা গেছে এই বছর কলকাতা বইমেলায় ২০ কোটি টাকারও বেশী মূল্যের বই বিক্রি হয়েছে যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড বলে জানা গেছে।  

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top