ছবি -প্রতীকী
উত্তরাপথ: Lero, সায়েন্স ফাউন্ডেশন আয়ারল্যান্ড রিসার্চ সেন্টার ফর সফ্টওয়্যার এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্কের গবেষকরা সাধারণভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং সফ্টওয়্যার সম্পর্কে জনসাধারণ কি বিশ্বাস করে তা জানার জন্য একটি দশ মিনিটের বেনামী অনলাইন সমীক্ষা করেন তাতে সাধারণভাবে এআই এবং সফ্টওয়্যার সম্পর্কে মানুষের আশা এবং ভয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। গবেষকদের বক্তব্য ,জনসাধারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে কি ভাবছে সেদিকে খুব কম মনোযোগ দেওয়া হয়। অন্যদিকে কিছু AI বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে মেশিনে প্রোগ্রামিং এর সময় পক্ষপাত করা হচ্ছে। যেহেতু বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে AIএর ডেটা ব্যবহার করা হচ্ছে তাই পক্ষপাত মূলক এই ডেটার ব্যবহার আমাদের সভ্যতার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)) আমাদের সভ্যতার অবসান ঘটাবে কিনা এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের জানতে হবে AI সম্পর্কিত সম্ভাব্য সুবিধা এবং ঝুঁকি উভয়ই তারপর একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির সাথে এই প্রশ্নটির সমাধান করা যেতে পারে।
একদিকে, এআই বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিত্য নতুন আবিস্কার , দক্ষতা উন্নত করতে এবং মানুষের ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। এআই প্রযুক্তিগুলি অন্যান্য অনেক অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে জটিল সমস্যা সমাধান, চিকিৎসা গবেষণা নিত্য নতুন তথ্য এবং ক্লান্তিকর কাজগুলি স্বয়ংক্রিয় করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। যা উল্লেখযোগ্য সামাজিক অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করতে পারে।
অন্যদিকে, AI এর সাথে যুক্ত সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ AI সিস্টেমগুলি মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার এবং অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাওয়ার বা মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। চাকরির স্থানচ্যুতি নিয়েও অনেকের উদ্বেগ রয়েছে কারণ অটোমেশন আরও বেশি প্রচলিত হয়ে উঠেছে।তবে AI কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহ নৈতিক বিবেচনা করতে পারে না। উপরন্তু, AI এর দ্রুত বিকাশ নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়াতে পারে যদি খারাপ উদ্দেশ্যে এটিকে ব্যবহার করা হয় বা ভুল হাতে পড়ে।
তবে একথা গুরুত্বপূর্ণ যে সভ্যতার উপর AI এর ভবিষ্যৎ প্রভাব কি হতে চলেছে তা এখনও অনিশ্চিত।এটি নির্ভর করছে কিভাবে সমাজে এটি বিকশিত, নিয়ন্ত্রিত এবং সংহত হয় তার উপর। অনেক গবেষক এবং সংস্থা সক্রিয়ভাবে AI সিস্টেমের দায়িত্বশীল বিকাশ এবং স্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। নৈতিকতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়ে আলোচনা চলছে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলি মোকাবেলা করতে এবং এআই প্রযুক্তির সুবিধাগুলি সর্বাধিক করার জন্য।
পরিশেষে, ফলাফল নির্ভর করবে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর AIউন্নয়নকে এমন একটি দিকে চালিত করতে হবে যা মানবিক মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলা করবে। নীতিনির্ধারক, গবেষক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞদের মধ্যেকার সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, সম্ভাব্য নেতিবাচক পরিণতিগুলি প্রশমিত করে AI এর সম্ভাবনাকে এমন ভাবে কাজে লাগাতে হবে, যেখানে AI সভ্যতার জন্য হুমকির পরিবর্তে মানবতার উপকার করবে।
আরও পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন