The Dome of the Rock: দ্য ডোম অফ দ্য রক একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসের মহিমান্বিত প্রতীক

উত্তরাপথ

দ্য ডোম অফ দ্য রক একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতীক। ছবি – উত্তরাপথ

দ্য ডোম অফ দ্য রক, জেরুজালেমের (Jerusalem কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। আজও এটি শহরের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। টেম্পল মাউন্টে অবস্থিত এই আইকনিক কাঠামোটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করেছে এর মনমুগ্ধরুদ্ধকর সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য দিয়ে।

এটি উমাইয়া রাজবংশের সময় ৬৮৫ এবং ৬৯১ CE এর মধ্যে নির্মিত হয়েছিল যা ইহুদি এবং মুসলিম উভয়ের কাছেই পবিত্র।ইসলাম ধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করেন কোনও এক রাতে নবী মুহাম্মদ এই জায়গা থেকে স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন। আবার, এই সাইটটি ইহুদি এবং খ্রিস্টান ঐতিহ্যের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ, কারন ইহুদি ঐতিহ্য অনুসারে ডোম অফ দ্য রক ভিত্তি যে পাথরের উপরে নির্মিত, সেই পাথরটি হল “পৃথিবীর নাভি” – সেই স্থান যেখানে সৃষ্টি শুরু হয়েছিল এবং এই স্থানে আব্রাহাম তার পুত্র আইজ্যাককে বলিদানের জন্য প্রস্তুত করেছিল।

এটি এক মিশ্র স্থাপত্য শৈলীর সংমিশ্রণ । গম্বুজের সামগ্রিক গঠনের জন্য গির্জা এবং বাইজেন্টাইন খ্রিস্টান মডেল অনুসরণ করা হয়েছিল । এর সাথে কোরানিক শিলালিপি মিলিত হয়েছে, যা এর নির্মাতাদের শৈল্পিক এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রদর্শন করে। মুল কাঠামোটি প্রায় ২০ মিটার ব্যাস এবং ৩০ মিটার উচ্চতা যুক্ত এর মাথায় রয়েছে একটি  সোনার গম্বুজ, যা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে দৃশ্যমান।

বিল্ডিংয়ের অষ্টভুজাকৃতির আকৃতি, উচ্চতর গম্বুজ  বাইরের অংশটি, কুরআনের আয়াত এবং ইসলামিক মোটিফগুলি সমন্বিত আলংকারিক মোজাইক দ্বারা সজ্জিত । গম্বুজের অভ্যন্তরটিও সমানভাবে সুন্দর, এর সুন্দর মার্বেল এবং পাথরের কাজ যা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

এর ধর্মীয় গুরুত্বের বাইরে, এটি জেরুজালেমে সহাবস্থানের প্রতীক হিসাবে রয়েছে। শহরের জটিল এবং প্রায়শই বিতর্কিত প্রকৃতি সত্ত্বেও, ডোম অফ দ্য রক একটি শেয়ার্ড হেরিটেজ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যা মুসলিম, ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা একইভাবে সম্মান করে। এটি জেরুজালেমের (Jerusalem) বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি স্থায়ী প্রতীক হয়ে উঠেছে।

বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে, এর স্থাপত্যের বেশ কয়েকবার সংস্কার এবং পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আজ, এটি একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন আকর্ষণ হিসাবে রয়ে গেছে, আজও সারা বিশ্ব থেকে বহু মানুষ এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য অন্বেষণ করতে এখানে আসে।

Western Wall, প্রাচীন ইহুদি মন্দির, ইজারাইল ইতিহাসের একটি অসাধারণ স্থান।। ছবি – উত্তরাপথ

দ্য ডোম অফ দ্য রক জেরুজালেমের(Jerusalem) সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং ধর্মীয় বৈচিত্র্যের প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এর স্থাপত্য মহিমা, ধর্মীয় তাৎপর্য এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব এটিকে ভ্রমণকারীদের জন্য এবং বিভিন্ন ধর্মের লোকেদের জন্য একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য স্থল করে তুলেছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


মানুষে মানুষে ঐক্য কীভাবে সম্ভব

দিলীপ গায়েন: হিন্দু,মুসলমান,ব্রাহ্মণ,তফসিলি।সকলেই মানুষ।কিন্তু এদের মধ্যে যে ব্যবধান তা হলো ধর্ম ও সাংস্কৃতিক। এই ব্যবধান মুছতে পারলে একাকার হওয়া সম্ভব। যারা বলছে আর্থিক সমতা প্রতিষ্ঠা হলে ব্যবধান মুছে যাবে, তাদের কথাটি বোধ হয় সঠিক নয়।তার প্রমাণ গরিব ও শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে আর্থিক ব্যবধান নেই। অথচ জাতিভেদ রয়ে গেছে। তেমনি কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা ব্যতীত ধনী ও শিক্ষিত সমাজে আর্থিক সচ্ছলতা থাকলেও জাতিভেদ রয়ে গেছে। একমাত্র হাসপাতালে বা চিকিৎসা ব্যবস্থায় জাতিভেদ নেই।কারণ সেখানে তো প্রচলিত ধর্মজাত প্রভেদ বা পরিচয় নেই। আছে মেডিসিন, যা সম্পূর্ণ বিজ্ঞান। কারোর ধর্ম বা জাত দেখে প্রেসক্রিপশন হয় কি? এখানে মানুষের একমাত্র এবং শেষ পরিচয় সে মানুষ। .....বিস্তারিত পড়ুন

হিউম্যানয়েড রোবট ARTEMIS রেডি পরবর্তী RoboCup-এর জন্য

অনয় কিরণ মাহাতো: কেমন যেন লাগে রোবট এর কথা শুনলে। তারপরে আবার হিউম্যানয়েড, ভাবা যায়। হিউম্যানয়েড রোবট এক জটিল anthropomorphic কৃত্রিম মেশিন যা রোবোটিক্স, লোকোমোশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এই হিউম্যানয়েড রোবর্ট এর বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে। ১৮১০ সালে জার্মানির ফ্রেডলিচ কাউফম্যানন প্রথম তৈরি করেছিলেন এক ট্রাম্পেট সৈনিক রোবর্ট। এরপর হুমানোইড রোবর্ট তৈরি করেন আরবের একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আল-যাজরি। এরপর লিওনার্দো দা ভিঞ্ছির আদলে জাপানের ওসাকা ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর ঈশিগুর .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top