আদানি কাণ্ডের পরও এক নম্বরে মোদী

উত্তরাপথ

লড়াইটা মূলত মস্তিষ্কের ,আগামী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক ‘ন্যারেটিভ’ তৈরির। লড়াইটা এখন শাসক দল ও বিরোধী দলের মধ্যে না হয়ে মোদী বনাম রাহুল হয়ে গেছে। রাহুল গান্ধী যত মোদী-আদানি প্রসঙ্গ তুলছেন লড়াইটা তখন উন্নয়ন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, চিনের আগ্রাসন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে সরে একমাত্র আদানি কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে এবং তাতে সুবিধা হচ্ছে বিজেপির। রাহুল আদানি –মোদী সম্পর্ককে বফোর্স ,টুজি র সমপর্যায়ে নিয়ে গিয়ে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাইছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ যেখানে মোদী সেখানে তিনি এই একটি মাত্র ইস্যূ নিয়ে লড়াই করে তিনি কতটা সফল হবেন তা সময়ই বলবে।
তবে একথা সত্য যে আদানি বিতর্কে বিজেপি যখন কিছুটা ব্যাকফুটে তখন বিদেশের মাটিতে রাহুল গান্ধির বক্তব্য বিজেপির হাতে লড়াইয়ের নতুন অস্ত্র তুলে দিল। বিজেপিও বলতে শুরু করল রাহুল ভারতবিরোধী ,বিদেশের মাটিতে আমাদের দেশকে আপমান করেছে। প্রচারে আবার চলে এলো জাতীয়তাবাদ ইস্যু। আর এই ইস্যু নিয়ে প্রচারে বিজেপির ধারের কাছে কেউ নেই তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যেমনটা গত লোকসভা নির্বাচনের সময় হয়েছিল। আর তাই বিজেপি লড়াইটা বিজেপি বনাম বিরোধী না করে মোদী বনাম রাহুলে পরিণত করতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী এখন নিজেই বলতে শুরু করেছেন রাহুল বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে দেশের সম্মান নিচু করেছেন, শুধু তা-ই নয় দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতির মোকাবিলায় পশ্চিমী দুনিয়ার হস্তক্ষেপ দাবী করেছেন এবং দেশবাসীকে এদের থেকে শতহস্ত দূরে থাকার নিদান দিয়েছেন।
‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কংগ্রেস ও রাহুলকে অনেক বছর পর একটা সমীহ করার মতো জায়গায় নিয়ে এসেছিল। কংগ্রেস-কর্মী ও সমর্থকদের মনে একটা আশার সঞ্চার হয়েছিল। দশ বছর পর কর্মী-সমর্থকরা একটা আন্দোলনের শরিক হয়ে অনেকটা উজ্জীবিত হয়েছিলেন কিন্তু রাহুল গান্ধী সেই সাফল্য কে ঘরে তুলতে পারলেন না। সদ্য সমাপ্ত কর্ণাটক, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ড বিধানসভা নির্বাচনে কোথাও রাহুল গান্ধীকে সামনে দাঁড়িয়ে লড়াইতে দেখা গেলনা। অন্যদিকে মোদী তাঁর কাজের হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও সমস্ত নির্বাচনে সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন। এমনকি সদ্য সমাপ্ত কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচনে যেখানে বিজেপির মুখমান্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ তা সত্বেও তিনি সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দলকে নেতৃত্ব দিলেন, প্রচারে নিজেকে আসল চেহারা হিসেবে তুলে ধরলেন। দলের কর্মীদের মনোবল বাড়ালেন।তাই মোদী বনাম রাহুল লড়াইয়ে লড়াইটা ‘সিরিয়াসনেসের’। মোদী জানেন লড়াইটা কিভাবে ময়দানে দাঁড়িয়ে করতে হয় আর এইখানেই মোদী গুনে গুনে রাহুলকে গোল দিয়ে যাচ্ছেন।
আজ আদানি কাণ্ডে মোদীকে রাহুল সহ বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণের পরও মোদী আবারও ৭৬ শতাংশের সমর্থন নিয়ে বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতাদের পিছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার শিরোপা ধরে রেখেছেন আর আদানি অর্থের দিক থেকে ২ থেকে ২১ নম্বরে নেমে গেছে।এটাই মোদীর ম্যাজিক।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top