অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি জগদিশ চন্দ্র বসুর কথাকে প্রমান করল

উত্তরাপথ : অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি আবিস্কারের পর আজ যে কথাগুলি অনেক পরীক্ষার পর বিজ্ঞানীরা  বলছেন ,সেইএকই কথার আভাস দিয়েছিলেন  ১৯০১ সালে অর্থাৎ ১২২ বছর আগে  আচার্য জগদিশ চন্দ্র বসু। সেই সময় তিনি বলেছিলেন,গাছের প্রান আছে এবং তারাও উত্তেজনায় সারা দেয় ।আবার সেই একই কথা ২০২৩ শে বিজ্ঞানীরা বললেন,  উদ্ভিদ শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয় জীব নয়; তাদের কাছে উল্লেখযোগ্য বৈদ্যুতিক সংকেত সিস্টেম রয়েছে যা তাদের পরিবেশগত উদ্দীপনায় সাড়া দিতে এবং তাদের নিজস্ব কাঠামোর মধ্যে যোগাযোগ করতে দেয়। এই বৈদ্যুতিক সংকেত বোঝা এবং উদ্ভিদ শারীরবৃত্তিতে তাদের ভূমিকা কি তা বিশ্লেষণ করা সবসময় বিজ্ঞানীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল।এই অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি বিকাশ উদ্ভিদের দ্রুত বৈদ্যুতিক সংকেতের ম্যাপিং সক্ষম করেছে।

উদ্ভিদের বৈদ্যুতিক সংকেত অধ্যয়ন করার জন্য ব্যবহৃত ঐতিহ্যগত পদ্ধতিগুলিতে জটিল বৈদ্যুতিক ঘটনাগুলি ক্যাপচার করার সীমিত ক্ষমতা  ছিল।গবেষকরা এখন একটি অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি তৈরি করেছেন যার দ্বারা উদ্ভিদের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের উচ্চ-রেজোলিউশন ম্যাপিং সম্ভব। এই প্রযুক্তির মধ্যে অতি-সংবেদনশীল ইলেক্ট্রোড এবং উন্নত সিগন্যাল প্রসেসিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে রিয়েল-টাইমে বৈদ্যুতিক সংকেত সনাক্ত ও বিশ্লেষণ করা হয়।

উদ্ভিদের মধ্যে দ্রুত বৈদ্যুতিক সংকেত মানচিত্র করার ক্ষমতা তাদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া বোঝার জন্য নতুন পথ খুলে দেয়। এই সংকেতগুলি উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন দ্রুত চলাচল, স্ট্রেস অভিযোজন এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই সংকেতগুলি ম্যাপিং এবং বিশ্লেষণ করে, বিজ্ঞানীরা কীভাবে গাছপালা তাদের পরিবেশকে উপলব্ধি করে এবং প্রতিক্রিয়া জানায় সে সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য অর্জন করতে পারে।

গাছপালা তাদের নিজস্ব কাঠামোর মধ্যে ক্রিয়াকলাপগুলিকে যোগাযোগ এবং সিঙ্ক্রোনাইজ করতে বৈদ্যুতিক সংকেত ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, বৈদ্যুতিক সংকেতগুলি স্টোমাটা খোলা এবং বন্ধ করা, পাতার নড়াচড়া এবং শিকড়ের বৃদ্ধির সমন্বয় করে। অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি সাথে, গবেষকরা এখন এই বৈদ্যুতিক সংকেতগুলির গতিবিদ্যা অধ্যয়ন করতে পারেন এবং উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশের মধ্যে যোগাযোগ এবং সিঙ্ক্রোনাইজেশনের পিছনে জটিল প্রক্রিয়াগুলি উন্মোচন করতে পারেন।

অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি উদ্ভিদের দ্রুত বৈদ্যুতিক সংকেত ম্যাপ করার ক্ষমতা সহ  বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। কৃষিতে, এই প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে আরও দক্ষ সেচ ব্যবস্থা, অপ্টিমাইজ করা উদ্ভিদ বৃদ্ধির কৌশল এবং শস্যে স্ট্রেস বা রোগের প্রাথমিক সনাক্তকরণে সহায়তা করতে পারবে । উদ্ভিদে দ্রুত বৈদ্যুতিক সংকেত ম্যাপ করার জন্য অত্যাধুনিক বায়োইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি বিকাশ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যেহেতু গবেষকরা এই প্রযুক্তিকে পরিমার্জিত এবং আরও উন্নত করতে প্রচেষ্টা করে চলেছেন,তাই আশা করা যাচ্ছে এটি থেকে আরও অনেক সম্ভাবনার জন্ম নেবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


মতুয়া আন্দোলনের এক মনোগ্রাহী ভাষ্য

অরবিন্দ পুরকাইত: আপাত বা গভীর কোনও স্তরেই তেমন কিছু তফাৎ পরিলক্ষিত না হলেও, বর্ণবাদী সমাজে একই পাড়ায় একেবারে প্রায় পাশাপাশি কেবল বিশেষ বিশেষ ঘরে জন্মানোর নিমিত্ত - শিক্ষাদীক্ষা পরের কথা – ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকেই আজীবন একজন শ্রদ্ধা-ভক্তি-প্রণাম পাওয়ার অদৃশ্য শংসাপত্রের অধিকারী আর অন্যজনের সেবা-শ্রদ্ধা-ভক্তির অদৃশ্য দাসখতের দায়বদ্ধতা! কেন-না সৃষ্টিলগ্নেই একজন প্রজাপতি ব্রহ্মার মুখনিসৃত আর অন্যজন পদজ যে! সুতরাং মুখ থাকবে সবার উপরে, সবার নিচে পা – এতে অস্বাভাবিকতা বা আশ্চর্যের তো কিছু নেই! কিন্তু কেবল সেবা-শ্রদ্ধাতেই সব মিটে .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top