

উত্তরাপথঃঅস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা সম্প্রতি একটি যুগান্তকারী গবেষণা করেছেন যা এই ধারণাটিকে প্রশ্নের মুখে এনে দিয়েছে যে ব্যক্তির ভাগ্য জন্ম দ্বারা নির্ধারিত হয়। গবেষণাটিতে জন্ম থেকে ৩৪ বছর বয়সী ১৬৭ জন শিশুর জীবন অনুসরণ করে, কীভাবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে তা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারাহ জনসনের নেতৃত্বে গবেষণা দলটি খুঁজে পেয়েছে যে যদিও একটি শিশুর পটভূমি তাদের জীবনের সুযোগগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে, তবে এটি শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে না। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে অনেক শিশু যারা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বড় হয়েছে তারা তাদের সম্মুখীন হওয়া বাধাগুলি অতিক্রম করতে এবং সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল।
অধ্যয়নের মূল ফলাফলগুলির মধ্যে একটি ছিল যে শিক্ষার সুযোগ অংশগ্রহণকারীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। যে সকল শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল তাদের আর্থ-সামাজিক পটভূমি নির্বিশেষে জীবনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল।এক্ষেত্রে শিক্ষাকে দারিদ্র্যের চক্র থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হিসাবে এবং প্রতিটি শিশুকে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে সমান সুযোগ দেওয়ার উপায় হিসাবে শিক্ষায় বিনিয়োগের গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে।
অধ্যয়ন থেকে আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় উঠে এসেছে, তা হল ব্যক্তিদের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য সমাজে পরিপার্শ্বিক পরিবেশের গুরুত্ব।যে সব শিশুএকটি সহযোগিতা মূলক পরিবারের সদস্য এবং যাদের বন্ধুবান্ধব তাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে সাহায্য করে সেই সব শিশুদের লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা বেশী । গবেষণায় ব্যক্তিদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় সংস্থান সরবরাহ করার ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের ভূমিকার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
গবেষণাটি অংশগ্রহণকারীদের আর্থিক স্থিতিস্থাপকতা এবং মানসিক সংকল্পকে তুলে ধরে। গবেষকদের মতে গবেষণায় অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকেই তাদের স্বপ্ন অর্জনের জন্য বড় বড় বাঁধা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। নতুন এই গবেষণা এত দিন ধরে চলে আসা এই ধারণাটিকে চ্যালেঞ্জ করে যে কারো ভাগ্য জন্মের সময় তাদের পরিস্থিতি দ্বারা পূর্বনির্ধারিত হয় এবং এটি ব্যক্তিদের জীবনে তাদের নিজস্ব পথ তৈরি করার ক্ষমতাকে তুলে ধরে। সামগ্রিকভাবে, অস্ট্রেলিয়ান গবেষণা সেই বিষয়গুলির উপর মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে যারা বিশ্বাস করে যে ব্যক্তির ভাগ্য জন্ম দ্বারা নির্ধারিত হয়।
আরও পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন