

উত্তরাপথ: পৃথিবীর সাথে একটি গ্রহাণুর সংঘর্ষের সম্ভাবনা দীর্ঘকাল ধরে বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ সংস্থাগুলির জন্য উদ্বেগের বিষয়। এই সম্ভাব্য বিপদ মোকাবেলার জন্য, NASA (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) DART মিশন (ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট) নামে একটি যুগান্তকারী মিশন তৈরী করেছিল । DART মিশনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল গ্রহাণু বিক্ষেপণ কৌশলগুলির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা এবং প্রদর্শন করা। বিশেষত, NASA তার একটি মহাকাশযানের সাথে ইছা করে একটি গ্রহানুর সংঘর্ষ করে । এটি করার মাধ্যমে, , NASA বুঝতে চেষ্টা করছে কিভাবে কাছাকাছি-আর্থ অবজেক্ট (NEOs) দ্বারা সৃষ্ট হুমকি প্রশমিত করা যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস থেকে স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটে ২০২১সালের ২৪ নভেম্বরে DART মহাকাশযানটি উতখেপ্ন করা হয় ।মহাকাশযানটি বাইনারি গ্রহাণু সিস্টেম ডিডাইমোসে ভ্রমণ করবে, যা একটি বড় গ্রহাণু (ডিডাইমোস এ) এবং একটি ছোট চাঁদ (ডিডাইমোস বি) নিয়ে গঠিত।
DART মহাকাশযানটি প্রায় ৬ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে (প্রায় ৩.৭মাইল প্রতি সেকেন্ড) গতিতে ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রহানুর সাথে সংঘর্ষ করে। এই ধাক্কায় গ্রহানুর গতিপথ সফল ভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে বলে পৃথিবী ভিত্তিক টেলিস্কপ গুলির বিশ্লেষণে ধরা পড়েছে। হাবল (Hubble Space Telescope) টেলিস্কপে সংঘর্ষের পর বিভিন্ন আকৃতির প্রায় ৩৪টি টুকরোর সন্ধান পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের পরের প্রভাবগুলি মূল্যায়ন করতে এবং অতিরিক্ত ডেটা সংগ্রহ করতে হেরা নামে একটি ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) মহাকাশযান ২০২৬ সালে Didymos পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
DART মিশন সম্ভাব্য গ্রহাণুর পতনের বিরুদ্ধে পৃথবীর প্রতিরক্ষার জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। একটি ছোট গ্রহাণুর গতিপথ পরিবর্তন করার ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে, এই মিশনটি বিচ্যুতি কৌশল সম্পর্কে আমাদের বোধগম্যতা বাড়াবে এবং পৃথিবীকে NEO থেকে রক্ষা করার জন্য ভবিষ্যত কৌশল বিকশিত করবে।
DART মহাকাশযান বিস্ফোরক বা পারমাণবিক ডিভাইস ব্যবহার করার পরিবর্তে গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষে গতিশীল প্রভাবক পদ্ধতি ব্যবহার করে।একটি গৌণ উদ্দেশ্য হিসাবে, DART মিশন LICIA (গ্রহাণুর ইমেজিংয়ের জন্য হালকা ইতালীয় কিউবস্যাট) নামক একটি ছোট কিউবস্যাট স্থাপন করবে। LICIA প্রভাবের ছবি ধারণ করবে এবং বিশ্লেষণের জন্য মূল্যবান তথ্য প্রদান করবে।
NASA এর DART মিশন সম্ভাব্য গ্রহাণুর প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের প্রতিনিধিত্ব করে। গতিশীল প্রভাবক কৌশল পরীক্ষা করে, মিশনের লক্ষ্য হল গ্রহাণুর প্রতিরক্ষার সম্ভাব্যতা প্রদর্শন করা এবং গ্রহের প্রতিরক্ষা কৌশল সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান প্রসারিত করা। DART মিশনের সফল সম্পাদন ভবিষ্যতের মিশন এবং প্রযুক্তির জন্য পথ প্রশস্ত করবে, এবং আমরা শেষ পর্যন্ত আমাদের গ্রহকে গ্রহাণুর হুমকি থেকে রক্ষা করতে সমর্থ হব।
আরও পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন